সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
মঙ্গলবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » মোবাইল ফোনের চাহিদার অর্ধেকই দেশে উৎপাদিত
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » মোবাইল ফোনের চাহিদার অর্ধেকই দেশে উৎপাদিত
১০১১ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মোবাইল ফোনের চাহিদার অর্ধেকই দেশে উৎপাদিত

---
স্মার্টফোন মানেই ‘মেড ইন কোরিয়া’, ‘মেড ইন চায়না’, ‘মেড ইন ভিয়েতনাম’-এর কথাই ঘুরেফিরে আসত। কিন্তু এখন থেকে যুক্ত হয়েছে আরেকটি নাম ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। এখন মোট চাহিদার অর্ধেক ফোনই দেশে তৈরি হচ্ছে। হোক তা স্যামসাং, অপো, ভিভো, টেকনো, ওয়ালটন কিংবা সিম্ফনি। উচ্চ প্রযুক্তির এই শিল্পে আমদানিকারক থেকে উত্পাদক হিসেবে বাংলাদেশ নাম লেখিয়েছে বছরখানেক আগেই। বাজেটে আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানো এবং স্থানীয় উত্পাদনে শুল্ক কমানোয় বদলে যায় দৃশ্যপট। একে একে বহুজাতিক নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো চাপে পড়ে দেশে কারখানা করা শুরু করে। এখন পর্যন্ত ১০টি ব্র্যান্ড দেশে মোবাইল ফোন সংযোজন করছে, প্রক্রিয়ায় আছে আরো কয়েকটি। জানুয়ারির মধ্যে সংযোজন থেকে উত্পাদনে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশীয় উত্পাদন দিয়েই শতভাগ চাহিদা পূরণের আশা করা হচ্ছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দেশে বছরে তিন কোটি ১০ লাখ হ্যান্ডসেটের (ফিচার ও স্মার্ট) চাহিদা আছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে স্মার্টফোনের বাজার সাত হাজার কোটি টাকার। ভলিউমে বা সংখ্যায় ফিচার ফোনের বাজার ৭০ শতাংশ এবং স্মার্টফোন প্রায় ৩০ শতাংশ। কিন্তু মূল্যমান অনুযায়ী মোট বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ স্মার্টফোনের দখলে। গত বছর স্মার্টফোনে ১২ শতাংশ, ফিচার ফোনে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যেই মোবাইল ফোন উত্পাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হবে বাংলাদেশ। দেশের মোট চাহিদার পুরোটাই পূরণ হবে দেশীয় উত্পাদন দিয়ে। এরপর এসব ফোন রপ্তানির পরিকল্পনাও আছে। তবে এ জন্য ব্যাকোয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা, নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা, পর্যায়ক্রমে আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো, চোরাই পথে অবৈধ ফোন বাজারে অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্ণধাররা।

সরকার প্রথম ২০১৭-১৮ অর্থবছরের স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য ট্যাক্স নীতি আরোপ করে এবং ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তা সংশোধিত হয়। এতে দেশে মোবাইল ফোন উত্পাদনে এবং মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ে দেশে এভাবে কারখানা করার হিড়িক পড়ে যায়। এ পর্যন্ত লাইসেন্স নিয়ে ১০টি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা হচ্ছে-স্যামসাং, ওয়ালটন, সিম্ফনি, ট্রানশন (টেকনো ও আইটেল), ফাইভস্টার, ইউনস্টার, অপো, ভিভো, টেসিশ মোবাইল (ওকে মোবাইল), লাভা। এ ছাড়া ইউ মোবাইল জানুয়ারিতে উত্পাদন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০১৮ সালের মধ্যেই দেশে কারখানা স্থাপন করে সেখানে সংযোজিত হ্যান্ডসেট বাজারে এনেছে ওয়ালটন, সিম্ফনি, স্যামসাং, আইটেল-ট্রানশন, ইউনস্টার ও ফাইভস্টার। এই উদ্যোগে কম্পানিগুলো হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে এবং কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান করেছে।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘গত বাজেটে স্থানীয় উত্পাদনের ওপর আমরা যেসব সুবিধা দিয়েছি, তা দেশে মোবাইল ফোন উত্পাদনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। আগামীতে স্থানীয়ভাবে উত্পাদন না করলে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর টিকে থাকা কঠিন হবে।’ মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা মোবাইল ফোন বাজারের ৫০ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালের আগেই শতভাগ চাহিদা দেশীয় উত্পাদন থেকে পূরণ হবে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ফেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, ‘আমরা কারখানা শুরুর পর এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ফোন বাজারে দিয়েছি। ২০২০ সালে ২৫ লাখ স্যামসাং স্মার্টফোন উত্পাদন এবং আমাদের ভলিউম মার্কেট শেয়ার ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি।’ তিনি বলেন, দেশে স্মার্টফোনের ভেন্ডর শিল্প প্রতিষ্ঠায় নীতি সহায়তা দরকার, যা লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনে বিনিয়োগ উত্সাহী করবে। আগামী বাজেটে আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আশা করি।
গাজীপুরে মোবাইল কারখানা করেছে ট্রানশন হোল্ডিংস বাংলাদেশ। সেখান থেকে টেকনো ও আইটেল ব্র্যান্ডের ফিচার ও স্মার্টফোন সংযোজন হচ্ছে। ট্রানশন হোল্ডিংস বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এক লাখের মতো ফোন সংযোজন করছি। আমরা ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনও দেশে সংযোজন করছি। আমাদের সক্ষমতা আছে মাসে পাঁচ লাখ ফোন বানানোর।’

ওয়ালটন মোবাইলের হেড অব সেলস আসিফুর রহমান খান বলেন, ‘২০১৭ সালে গাজীপুরের চন্দ্রায় প্রথম মোবাইল ফোন কারখানা স্থাপন করে ওয়ালটন। মাসে উত্পাদনক্ষমতা চার লাখ থেকে ছয় লাখ ফিচার ফোন এবং ৮০ হাজার থেকে এক লাখ স্মার্টফোন। দেশে কারখানা চালুর পর এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ মোবাইল হ্যান্ডসেট উত্পাদন ও বাজারজাত করেছে ওয়ালটন। ওয়ালটন সব সময়ই দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এবং চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের মোবাইল হ্যান্ডসেট বাজারে ছেড়ে আসছে।’

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার জিরাবোতে প্রায় ৫৭ হাজার বর্গফুট এলাকায় স্থাপিত কারখানা করেছে এডিসন গ্রুপ। সিম্ফনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহীদ বলেন, দেশে মোবাইল ফোনের মতো হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ চালু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ‘সিম্ফনির কারখানায় আন্তর্জাতিক মানের হ্যান্ডসেট উত্পাদনে আমরা বদ্ধপরিকর এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আমাদের এ প্রয়াস সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ভিন্নিপাড়ায় কারখানা স্থাপন করেছে ইউনস্টার মোবাইলের মূল কম্পানি আনিরা ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানায় মোবাইল সংযোজন শুরু করেছি। প্রায় এক লাখ বর্গফুটের কারখানায় এখন মাসে দেড় লাখ ইউনিট ফোন উত্পাদনের সক্ষমতা বাড়িয়ে তিন লাখ করা হবে। আমরা পিসিবি (মাদারবোর্ড) তৈরির মেশিনারিজ সংযোজন করতে যাচ্ছি।’
প্রতি মাসে উত্পাদন করছে ৫০ হাজার হ্যান্ডসেট সংযোজন করছে ফাইভস্টার। এর মধ্যে ৪৫ হাজারই ফিচার (বাটন) ফোন। তারা গত এক বছরে উত্পাদন করেছে পাঁচ লাখ। চলতি বছর ১০ লাখ মোবাইল ফোন উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান ফাইভস্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওমর ফারুক।

এদিকে সর্বশেষ দেশে কারখানা করেছে চীনা ব্র্যান্ড অপো ও ভিভো। এরই মধ্যে তারা উত্পাদনও শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কারখানায় প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল সংযোজন শুরু করেছে। বছরে ১০ লাখ মোবাইল সংযোজন করবে ভিভো।
বেনলি ইলেকট্রনিক এন্টারপ্রাইজ কম্পানির ব্যাপারে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় কারখানা স্থাপন করছে অপো। মাসে এক লাখ উত্পাদনক্ষমতার এই কারখানা থেকে বছরে ১২ লাখ স্মার্টফোন বাজারে ছাড়তে চাইছে অপো। জানতে চাইলে অপো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যামন ইয়াং বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতি। দ্রুত ডিজিটাইজেশনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফাইভজি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে আমরা এখানে অ্যাসেম্বলি প্লান্ট করেছি। এতে আমাদের গ্রাহকরা আরো সাশ্রয়ী দামে আমাদের স্মার্টফোন কিনতে পারবেন।’ সূত্র কালের কণ্ঠ



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
থাইল্যান্ডে ইউএন এসকাপ-এর ৮০তম সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্বে প্রতিমন্ত্রী পলক
আইসিসি টুর্নামেন্টের ডিজিটাল সম্প্রচার স্বত্ব পেল টফি
গ্রাহকের ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের স্বপ্ন পূরণ করলো রিয়েলমি
বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয় ২৫১৬.২ কোটি টাকা
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ও এপেক্স ডিএমআইটি লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি
বেসিস নির্বাচনের প্রার্থী পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
ইউএন এসকাপ সম্মেলনে বাংলাদেশের আয়োজনে স্মার্ট উদ্ভাবন বিষয়ক সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত
উবারের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্সের ৮ম সংস্করণ প্রকাশ
চ্যাম্পিয়ন বরিশালকে নগদের ২০ লাখ টাকা উপহারের চেক হস্তান্তর
মানা বে ওয়াটার পার্কে বিকাশ পেমেন্টে ১০% ডিসকাউন্ট