সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, জানুয়ারী ২১, ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
বুধবার ● ১ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » উইকিপিডিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়, কতটা নির্ভরযোগ্য এর তথ্য?
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » উইকিপিডিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়, কতটা নির্ভরযোগ্য এর তথ্য?
১১৭ বার পঠিত
বুধবার ● ১ জানুয়ারী ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

উইকিপিডিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়, কতটা নির্ভরযোগ্য এর তথ্য?

মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন

---উইকিপিডিয়া আমাদের প্রায় অনেকেরই কাছে বেশ পরিচিত। কোনো তথ্য সংগ্রহের জন্য অনেকের প্রথম পছন্দ উইকিপিডিয়া, হোক সেটা একেবারে ছোটখাটো বিষয় কিংবা গুরুগম্ভীর কিছু।

বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে বহুল ব্যবহৃত এই মাধ্যম সম্পর্কে প্রায়ই কয়েকটা প্রশ্ন উঠে থাকে- উইকিপিডিয়া কীভাবে কাজ করে? এই অনলাইন বিশ্বকোষ চালানোর জন্য কোথা থেকে টাকা আসে? সেখানে প্রকাশিত বিষয় সম্পর্কে কারা লেখেন? উইকিপিডিয়ার নেপথ্যে কে রয়েছে?

উইকিপিডিয়া কী?: উইকিপিডিয়াকে ‘অনলাইন এনসাইক্লোপিডিয়া’ বা ইন্টারনেট ভিত্তিক বিশ্বকোষ বলা যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী ২০০১ সাল থেকে পরিচিত এই বিশ্বকোষ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এবং এটা ‘ওপেন সোর্স’ সফ্টওয়্যার ভিত্তিক। নির্দিষ্ট একটা সফ্টওয়্যারের কপিরাইটের অধিকারী ব্যক্তি বা সংস্থা যখন ব্যবহারকারীকে সম্পাদনা এবং উন্নয়নের অধিকার দেয়, তখন তাকে ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যার বলে।

‘উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামক একটা অলাভজনক সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয় উইকিপিডিয়া। এই উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।

উইকিপিডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের মধ্যে একটা। বর্তমানে ছয় কোটিরও বেশি প্রকাশিত লেখা রয়েছে উইকিপিডিয়ায়। প্রতি মাসে এই ওয়েবসাইটের ‘পেজভিউ’ ১০ লক্ষ কোটির বেশি।

উইকিপিডিয়ার পেজে কি যে কেউ লিখতে পারেন?: এর উত্তর - হ্যাঁ। কোনো নতুন বিষয়ে লেখার অনুমতি বা ইতিমধ্যে বিদ্যমান তথ্যে ‘হেরফের’ করার অনুমতি সবার রয়েছে। এটা সম্ভব হওয়ার কারণ উইকিপিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তির হাতে নেই। এটা উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, চাইলে যে কেউ লিখতে পারেন।

কারা লেখেন এই তথ্য?: উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত বিষয়ে কারা লেখেন সে সম্পর্কে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো স্বেচ্ছাসেবকরাই উইকিপিডিয়ার জন্য লেখেন।

বর্তমানে উইকিপিডিয়ার জন্য কাজ করেন প্রায় তিন লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক। তারাই বিভিন্ন বিষয়ে লেখেন, নতুন বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করেন এবং সেই তথ্য সঠিক কি না সেটা যাচাই করাও তাদেরই দায়িত্ব।

এই কাজ যে কেউ করতে পারেন। ওই ওয়েবসাইটে কাজের উপর ভিত্তি করে এই স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন ভূমিকা পালন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এই ওয়েবসাইটে যারা কাজ করেন তারা সেটা স্বেচ্ছায় করেন এবং এর জন্য কোনো রকম বেতন পান না। স্বেচ্ছাসেবকরা চাইলে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে পারেন।

কোনো গাইডলাইন আছে কি?: উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, ওয়েবসাইটের কোন পেজে কী লেখা হচ্ছে তার ওপর এই সংস্থার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে এর অর্থ এই নয়, যেকোনো বিষয় নিয়ে ইচ্ছে মত কেউ লিখতে পারেন। ওয়েবসাইটে কী কী প্রকাশিত হবে সে বিষয়ে অনেক নীতিমালা ও গাইডলাইন রয়েছে। যেমন, উইকিপিডিয়ায় এমন কোনো নতুন তথ্য লেখা যাবে না, যা সম্পর্কে আজ পর্যন্ত কোথাও কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য মুদ্রিত উৎসকে ভিত্তি করেই কিছু লেখা যেতে পারে।

প্রকাশিত বিষয়বস্তু সম্পাদক, ওয়েবসাইটের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা প্রশাসক এবং ‘কম্পিউটার বট’ দ্বারা নিরীক্ষণ করা হয়। এর সত্যতাও যাচাই করা হয়। সম্পাদনার সময় সিনিয়র সম্পাদকরা কোনও নিবন্ধ, তার কিছু অংশ বদলাতে পারেন বা প্রয়োজন হলে বাদও দিতে পারেন।

কোনো লেখা বা তার সম্পাদনা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তারপর সে বিষয়ে আলোচনা হয় এবং পারস্পরিক সম্মতির পরই ওই লেখা প্রকাশ করা হয়। কোনো নিবন্ধ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে বিষয়টার উল্লেখ উইকিপিডিয়ার পেজে থাকে। যে কেউ চাইলে তা দেখতে পারেন। কোনো লেখায় বিতর্ক বা বিবাদ দেখা দিলে তা সমাধানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিও রয়েছে।

কতটা নির্ভরযোগ্য এই তথ্য?: একাডেমিক জগতের ব্যক্তিরা প্রায়শই পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যে কোনো কিছু জানতে উইকিপিডিয়ার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে কিন্তু সেই তথ্যকে ‘নির্ভরযোগ্য উৎস’ হিসাবে বিবেচনা করা যায় না। উইকিপিডিয়া নিজেও একই পরামর্শ দিয়ে থাকে। এই ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে যে সেখানে প্রকাশিত তথ্যকে প্রাথমিক উৎস হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।

উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত লেখায় ভুল থাকা সম্ভব। প্রতিটা লেখার নিচে অনেকগুলো রিলেটেড সোর্স (সম্পর্কিত উৎসের) তালিকা থাকে। এই উৎসগুলোর ভিত্তিতেই নিবন্ধ লেখা হয়ে থাকে। ওই তালিকায় উল্লেখ করা প্রতিবেদন থেকে তথ্য সঠিক কি না তা যাচাই করা যেতে পারে।

যদি কোনো নিবন্ধে সম্পাদনা করে বহুবার পরিবর্তন করা হয়ে থাকে বা সেই পরিবর্তনগুলো নিয়ে বিতর্ক থাকে, তবে অন্তর্র্বতীকালীন সময়ের জন্য ওই লেখায় সম্পাদনাও নিষিদ্ধ করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?: উইকিপিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই প্রশ্ন তুলেছেন। মিডিয়া বিশেষজ্ঞ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র অধ্যাপক অ্যামি ব্রুকম্যনের মতে, খুব একটা পরিচিত নয়, এমন বিষয়ে উইকিপিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্য পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে। কিন্তু কোনো সুপরিচিত বিষয়ে উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত লেখা ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য’ হিসাবে কাজ করতে পারে। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে অ্যামি ব্রুকম্যান জানিয়েছেন, কোনো জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন শুধুমাত্র কয়েকজন বিশেষজ্ঞই দেখেন এবং পরে সেই লেখায় কোনও পরিবর্তন হয় না। কিন্তু উইকিপিডিয়ার ক্ষেত্রে তা হয় না।

উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত একটা জনপ্রিয় লেখা হাজার হাজার মানুষ পর্যালোচনা করতে পারেন। উইকিপিডিয়া সম্পর্কে সমালোচনা যেমন হয়েছে, তেমনি অভিযোগও উঠেছে। উইকিপিডিয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ।

রক্ষণশীল থিংক ট্যাংক ‘ম্যানহাটন ইনস্টিটিউট’-এর গবেষণায় দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের বেশি নেতিবাচকভাবে দেখানোর প্রবণতা রেেয়ছে উইকিপিডিয়ায়। তবে ‘ম্যানহাটন ইনস্টিটিউট’-এর পক্ষ থেকে একথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, এই ওয়েবসাইট সার্বজনিক স্তরে তথ্য সংগ্রহের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

উইকিপিডিয়া চালানোর জন্য অর্থ কোথা থেকে আসে?: উইকিপিডিয়ার বিষয়ে যে সব প্রশ্ন রয়েছে তার অন্যতম হলো, এই অনলাইন বিশ্বকোষ চালানোর জন্য অর্থ কোথা থেকে আসে?

এই ওয়েবসাইটের পেজে কোনও বিজ্ঞাপন থাকে না। উইকিপিডিয়ার দাবি, তারা ব্যবহারকারী ব্যক্তিদের পার্সোনাল ডেটা (ব্যক্তিগত তথ্য) ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে না, যেমনভাবে অনেক ওয়েবসাইটই আয় করে থাকে। তাহলে টাকা কোথা থেকে আসে?

আপনি যদি উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত কোনও লেখা পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই তাদের ওয়েবসাইটে শুরুতেই অনুদান দেওয়ার জন্য একটা আবেদন আপনার চোখে পড়েছে। এই অনুদানের মাধ্যমে অর্থায়ন হয় উইকিপিডিয়ায়। উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন ২০২২-২৩ সালে ১৮ কোটি মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান পেয়েছে। উল্লেখ্য, অনেক দেশেই বিতর্কে জড়িয়েছে উইকিপিডিয়া। বিশে^র কমপক্ষে ১৩টি দেশে উইকিপিডিয়ার উপর ভিন্ন ভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চীন, মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়া উইকিপিডিয়ার উপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর পাশাপাশি রাশিয়া ও ইরান উইকিপিডিয়ার বেশ কিছু লেখা নিষিদ্ধ করেছে।

শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালে উইকিপিডিয়াকে তিন দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তান। এর কারণ হিসাবে বলা হয়, উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত কিছু লেখা সেদেশের মুসলমানদের ভাবাবেগকে আঘাত করেছে।



আইসিটি সংবাদ এর আরও খবর

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে করনীয়’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে করনীয়’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
২৬তম অন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে ১০টি পদক পেল বাংলাদেশ ২৬তম অন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে ১০টি পদক পেল বাংলাদেশ
এশিয়ান সুডোকু চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের অংশগ্রহন এশিয়ান সুডোকু চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের অংশগ্রহন
ঢাকায় ‘আমি কি এআই কে বিশ্বাস করতে পারি?’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত ঢাকায় ‘আমি কি এআই কে বিশ্বাস করতে পারি?’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সনদ পেল হুয়াওয়ের ডেটা স্টোরেজ সিস্টেম সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সনদ পেল হুয়াওয়ের ডেটা স্টোরেজ সিস্টেম
বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ইয়োগা ২ ইন ১ ল্যাপটপ বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ইয়োগা ২ ইন ১ ল্যাপটপ
বিশ্বের শীর্ষ ১০ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের তালিকায় টেকনো বিশ্বের শীর্ষ ১০ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের তালিকায় টেকনো
চীনের লুইআন ব্র্যান্ডের ই-বাইক নিয়ে এলো ডিএক্স গ্রুপ চীনের লুইআন ব্র্যান্ডের ই-বাইক নিয়ে এলো ডিএক্স গ্রুপ
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে টেকসই উন্নয়নে বেসিসের সেমিনার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে টেকসই উন্নয়নে বেসিসের সেমিনার
মাত্রাতিরিক্ত কর না কমানো হলে গ্রামীন মানুষ সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট পাবে না মাত্রাতিরিক্ত কর না কমানো হলে গ্রামীন মানুষ সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট পাবে না

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে করনীয়’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
২৬তম অন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে ১০টি পদক পেল বাংলাদেশ
এশিয়ান সুডোকু চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের অংশগ্রহন
ঢাকায় ‘আমি কি এআই কে বিশ্বাস করতে পারি?’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সনদ পেল হুয়াওয়ের ডেটা স্টোরেজ সিস্টেম
বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ইয়োগা ২ ইন ১ ল্যাপটপ
বিশ্বের শীর্ষ ১০ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের তালিকায় টেকনো
চীনের লুইআন ব্র্যান্ডের ই-বাইক নিয়ে এলো ডিএক্স গ্রুপ
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে টেকসই উন্নয়নে বেসিসের সেমিনার
মাত্রাতিরিক্ত কর না কমানো হলে গ্রামীন মানুষ সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট পাবে না