সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, মে ৭, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
মঙ্গলবার ● ২৮ জুন ২০১১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আইসিটি নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ রাখার দাবি
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আইসিটি নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ রাখার দাবি
৬৯৩ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ২৮ জুন ২০১১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আইসিটি নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ রাখার দাবি

 মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর যৌথ আয়োজনে গতকাল জাতীয় বাজেট ২০১১-২০১২ এর পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বেসিস সভাপতি মাহবুব জামানের স্বাগত বক্তব্যের পর তিন সমিতির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদান করেন বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার। তিনি অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের স্পিকারকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাজেট উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ প্রদান করে বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দেশবাসীকে দিয়েছে সেই তুলনায় বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেনি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ‘ভিশন ২০২১’ ঘোষণার পর এবার নিয়ে তৃতীয়বার সংসদে বাজেট পেশ করা হলো। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে আমাদের প্রত্যাশা ছিল জাতীয় আইসিটি নীতিমালার (২০০৯) আলোকে এবারের বাজেটে সামগ্রিকভাবে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং এই বাজেটে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা, কর্মপরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকবে। কিন্তু এবারের বাজেটে আইসিটি শিল্পের উন্নয়নের ব্যাপারটি বরাবরের মতো অবহেলিতই রয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস, বেসিস এবং আইএসপিএবি-এর পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত প্রস্তাবনা পেশ করা হয় এবং বাজেট অনুমোদনের সময় বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণায় জাতীয় আইসিটি নীতিমালা বাস্তবায়নের যথেষ্ট প্রতিফলন নেই। জাতীয় আইসিটি নীতিমালায় ৩০৬টি অ্যাকশন আইটেম আছে বলে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকশন আইটেমের মধ্যে ১৫৯নং অনুচ্ছেদে আইসিটি শিল্প উন্নয়ন ফান্ড গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ৭০০ কোটি টাকার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে করা হলেও বাজেটে এ সংক্রান্ত কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। একই সঙ্গে নীতিমালার ১৫৮নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আইসিটি শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হলেও এ ব্যাপারে কোন বাজেট বরাদ্দ নেই।
বাজেট বক্তৃতায় হাইটেক পার্কের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এর উন্নয়ন কাজ শুরু করার জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ না থাকলে প্রকৃতপক্ষে এর বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য অবদান জনতা টাওয়ারকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক হিসেবে ঘোষণা। কিন্তু এর উন্নয়নের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ছাড়াও ঢাকাতে ৩টি এবং ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি আইটি পার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাজেটে এ বিষয়ে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। এছাড়া আশা করা হয়েছিল, বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মানবসম্পদ তৈরিতে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হবে। কিন্তু এ বিষয়ে বাজেটে কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি।
অন্যান্য শিল্পখাতের সঙ্গে সফটওয়্যার ও আইসিটি খাতের কর অব্যাহতি সুবিধা ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও জাতীয় আইসিটি নীতিমালায় এ সুবিধা ২০১৮ পর্যন্ত করার কথা উল্লেখ আছে। আইসিটি বিষয়ে বিশ্বখ্যাত গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গার্টনার বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি আউটসোর্সিং দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আইটি অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি কর অবকাশ সুবিধা জাতীয় আইসিটি নীতিমালার আলোকে ২০১৮ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা দরকার।
ভূমি রেজিস্ট্রেশন, রেকর্ড, ট্রেড পোর্টাল ইত্যাদি অটোমেশনের কথা বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় আইসিটি নীতিমালার ১০০নং অ্যাকশন আইটেমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ই-গভর্নেন্স কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন বাজেটের ৫ শতাংশ ও রাজস্ব বাজেটের ২ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে বাজেটে কোন সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি।
মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের জন্য ৭৮টি সেবার উপর নির্দিষ্ট কোড থাকলেও সফটওয়্যার ও আইটিইএস এর জন্য কোন কোড দেয়া হয়নি। যদিও বাজেট পূর্ববর্তী এ সম্পর্কিত সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের তিন প্রধান অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়েছিল।
অর্থমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দেশব্যাপী ইন্টারনেট বিস্তারের ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করলেও এখনো পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়নি, যা আইসিটি নীতিমালার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, তদুপরি, ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির অন্যতম মাধ্যম ফাইবার অপটিক ক্যাবলের উপর শুল্কহার বৃদ্ধি (৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ) ইন্টারনেট সমপ্রসারণে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করবে।
কম্পিউটার ও নেটওয়ার্ক সামগ্রী আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ এটিভি (এডভান্সড ট্রেড ভ্যাট) ধার্য আছে। সমিতিগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিল এই ৩ শতাংশ চূড়ান্ত ভ্যাট হিসেবে গণ্য করা হোক, খুচরা পর্যায়ে বা সরবরাহকারী পর্যায়ে আর কোন ভ্যাট আদায় যেন করা না হয়। কিন্তু বাজেটে এ বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়নি।
২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে ল্যাপটপের অন্যতম অংশ ক্যারিং ব্যাগের উপর ২৫ শতাংশ কাস্টম ডিউটি, ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি, ২০ শতাংশ সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি, ১৫ শতাংশ ভ্যালু এডেড ট্যাক্স, ৩ শতাংশ এডভান্স ট্রেড ভ্যাট এবং ১ শতাংশ প্রি শিপমেন্ট ইন্সেপেকশন চার্জ আরোপের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ল্যাপটপ ক্যারিং ব্যাগ ল্যাপটপের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর ফলে প্রতিটি ল্যাপটপের সঙ্গেই একটি করে ক্যারিং ব্যাগ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। ক্যারিং ব্যাগের উপর প্রস্তাবিত ৭২ শতাংশ (সর্বমোট) কর আরোপ করা হলে ভবিষ্যতে ল্যাপটপের সঙ্গে বিনামূল্যে ক্যারিং ব্যাগ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।
প্রস্তাবিত বাজেটে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনিটরের ক্ষেত্রে ১৯ ইঞ্চির ঊধর্্েব অর্থাৎ মার্কেটে প্রচলিত ১৯.৫ ইঞ্চি হতে তদোর্ধ্ব সব মনিটরের উপর বর্ধিত হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে ক্রেতাদের চাহিদা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ১৯.৫ ইঞ্চি হতে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের মনিটরের চাহিদা লক্ষণীয় এবং এ ধরনের মনিটর কর্মক্ষেত্রে কাজের গতি ত্বরান্বিত করে। যার ফলে, বিগত ২০১০-১১ অর্থ বছরে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের মনিটরের উপর বর্ধিত কর আরোপ হয়নি। মনিটরের উপর বর্ধিত কর আরোপের ফলে ক্রেতাসাধারণের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।
বর্তমানে যে সব মোবাইল ফোন সেট পাওয়া যায় তাতে উন্নত মানের ডিজিটাল ক্যামরা থাকে যার মাধ্যমে স্টিল পিকচার, এমপি থ্রি ও ভিডিও সংরক্ষণ করা যায়, টিভি দেখা যায় এবং এফএম রেডিও শোনা যায়। কিন্তু ওই মোবাইল ফোন ক্যামেরা, টিভি, রেডিও বা এমপি থ্রি এর এইচএস কোড অন্তর্ভুক্ত করে কাস্টম ডিউটি আদায় করা হচ্ছে না। ক্যামেরা আজ কোন বিলাসিতার পণ্য নয়, ইহা একটি অতিশয় প্রয়োজনীয় পণ্য। যাহার ফলে ছাত্র/শিক্ষক/সাংবাদিক/ব্যবসায়ী/ব্যাংক/বীমা/সরকারি প্রতিষ্ঠান সবাই তার সুফল ভোগ করছেন।
সরকার যেখানে বিদ্যুতের নিশ্চয়তা দিতে পারে না জেনারেটর/সোলার সিস্টেমকে প্রাধান্য দিয়ে নিম্নপর্যায়ে কাস্টম ডিউটি ধার্য করেছে। আর কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য ২০০০ ভিএ পর্যন্ত ইউপিএস-এর কাস্টম ডিউটি ২৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে আমদানি নিরুৎসাহী করা হচ্ছে।
সারা বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি কাজে ব্যবহারের জন্য ক্যাট ৫, ক্যাট ৬ নেটওয়ার্কিং ক্যাবলে কাস্টম ডিউটি ২৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট বলবৎ রাখা হয়েছে।
এক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার এবং সব ধরনের মনিটর, ডিজিটাল ক্যামেরা, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, নেটওয়ার্কিং ক্যাবলস, ফ্ল্যাশ কার্ড, ল্যাপটপ ব্যাগ, ইউপিএস, আইপিএস এর কাস্টম ডিউটি প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়।
বিসিএস সভাপতির বক্তব্যের পর আইএসপিএবি’র সহ-সভাপতি সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ইন্টারনেট সুবিধা সবাই চাই। স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে হলে ট্যাক্স ফ্রি করা প্রয়োজন। ইন্টারনেটের উপর ভ্যাট/ট্যাক্স আরোপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায়। বেসিস সভাপতি মাহবুব জামান বলেন, দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ দিতে হবে। এ জন্য সবার আগে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। দক্ষ প্রযুক্তিক জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করা যায় সে জন্য আরও বেশি করে অবকাঠামোগত সুবিধা তৈরি করে দিতে হবে। আইএসপিএবি এর সভাপতি আক্তারুজ্জামান মঞ্জু তার বক্তব্যে বলেন, দেশের সব ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান পৌঁছে দিতে হলে সরকারকে এই খাতের উপর থেকে সব ভ্যাট তুলে নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিসিএস সহ-সভাপতি কাজী আশরাফুল আলম, মহাসচিব মজিবুর রহমান স্বপন, বেসিস মহাসচিব ফোরকান বিন কাসেম, পরিচালক এস কবির আহমেদ এবং আইএসপিএবি মহাসচিব এম এ হাকিম।



আর্কাইভ

মা দিবস উপলক্ষে ফুডপ্যান্ডার বিশেষ ক্যাম্পেইন
দেশের বাজারে লেনোভো আইডিয়াপ্যাড স্লিম ৩ আই সিরিজের ল্যাপটপ
দুবাই ফিনটেক সামিট ২০২৪ এ রিভ চ্যাট
বাংলাদেশের বাজারে ভিভো’র নতুন ফোন ভি৩০ লাইট
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহবান
স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের জন্য আইডিয়া প্রকল্পের সার্টিফিকেট কোর্স
বিটিআরসিতে ডিজিটাল সেবার প্রদর্শনী
ফাইবার এট হোম-কে ১৫ বছরের জন্য লাইসেন্স নবায়ন করল বিটিআরসি
ইনোভেশন হাব থেকে বের হবে ইউনিকর্ন স্টার্টআপ
বিকাশ পেমেন্টের মাধ্যমে গোল্ড কিনে সঞ্চয় করা যাচ্ছে ‘গোল্ড কিনেন’ অ্যাপে