
সোমবার ● ২৩ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » শেষ হলো ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’
শেষ হলো ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’
সফলভাবে সম্পন্ন হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম আয়োজন ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’। গত ২১ ও ২২ জুন রাজধানীর সেনাপ্রাঙ্গণে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর আয়োজনে এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিলের সহযোগিতায় ষষ্ঠবারের মতো এবারের সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘বিপিও ২.০: রেভ্যুলেশন টু ইনোভেশন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের সামিটে বিপিও খাতের রূপান্তরের পাশাপাশি উদ্ভাবনের গতিপথকে তুলে ধরা হয়। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, নীতিনির্ধারক, তরুণ পেশাজীবী এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উপস্থিতি সামিটকে একটি বিশ^মানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করে।
সামিটে ৩০টিরও অধিক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইটিইএস/বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা ও পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছে। বিপিও খাতের সামগ্রিক অগ্রগতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজন করা হয় নয়টি থিমভিত্তিক সেমিনার ও কর্মশালা, যেখানে ৮৬ জন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, কর্পোরেট নেতৃবৃন্দ ও সরকারের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহন করেন। সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন ও আইটি পলিসি সংক্রান্ত নানা বিষয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় উঠে আসে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা।
এবারের সামিটে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল একাধিক এক্সপো জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোন যেখানে দর্শনার্থীরা সরাসরি অভিজ্ঞতা নিতে পেরেছেন প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঙ্গে। উল্লেখযোগ্য এক্সপেরিয়েন্স জোনগুলোতে ছিল স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা, জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নির্মিত অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) অভিজ্ঞতা, উন্নতমানের ড্রোন ও সাবমেরিন টেকনোলজি, এবং রোবট প্রদর্শনী- যা আগত অতিথি ও তরুণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
তরুণদের জন্য ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও চাকরি মেলা ছিল সামিটের অন্যতম আয়োজন। বিপিও খাতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয় বিশেষ কর্মশালা, যেখানে তাদের সামনে তুলে ধরা হয় আউটসোর্সিং শিল্পের সম্ভাবনা ও পেশাগত বিকাশের বাস্তব চিত্র। চাকরি মেলার মাধ্যমে শতাধিক তরুণ তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয় যেখান থেকে ১০০ এর অধিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়।
ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা, সফলতা ও ভবিষ্যৎ পথনকশা নিয়ে আয়োজন করা হয় পৃথক সেমিনার, যেখানে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নীতিমালা সংশোধন ও খাতভিত্তিক নীতিনির্ধারণ নিয়েও হয় বিশেষ পলিসি সংলাপ, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিগণ, আইসিটি খাতের নীতিনির্ধারক, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও গবেষকরা। এ সেশনে আউটসোর্সিং শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতিগত সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সামিটে কর্মক্ষেত্রে নারী বিষয়ক সেমিনারে নারীর নেতৃত্ব, নিরাপদ পরিবেশ এবং সমান সুযোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সামিটে আরো আয়োজন করা হয় ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের ভূমিকা, এবং বৈশি^ক অংশীদারত্ব ও আউটসোর্সিংয়ের ভবিষ্যৎ বিষয়ক গুরুত্ববাহী সেমিনারসমূহ যাতে অংশ নেন দেশি-বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; ড. মুঃ নজরুল ইসলাম, সচিব (পূর্ব), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; আবু সাঈদ, মহাপরিচালক, আইসিটি অধিদপ্তর। আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাক্কো সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম।