বুধবার ● ১৬ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » দেশে তৈরি রোবটে আগ্রহ দর্শনার্থীদের
দেশে তৈরি রোবটে আগ্রহ দর্শনার্থীদের
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে তিন দিনের ডিজিটাল পণ্যের মেলা ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’। আজ মেলার শেষ দিন। মেলা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে তরুণ দর্শনার্থীরা রোবট আর আধুনিক সব প্রযুক্তিপণ্য দেখতে ভিড় করেছেন। রোবটের কথা বলা, নড়াচড়া কিংবা হাত মেলানো দেখে অবাক অনেকেই। দেশের বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও উদ্ভাবকেরা তাদের তৈরি রোবট ও যন্ত্রপাতি মেলায় প্রদর্শন করছে।
প্রদর্শনীতে ঢুকতেই রোবটের দেখা মেলে। এমন রোবট ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মেলার অন্যতম আকর্ষণ দেশে উদ্ভাবিত এসব রোবট। রোবট নির্মাতারা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। লি, মাইশা, আরমিনা, আলপনা, টিভেট নামের রোবটগুলো দশনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। এ ছাড়া মেলায় ড্যান্সিং রোবটের নাচ দেখতে অনেকে ভিড় করছেন। মেলায় রোবটের পাশাপাশি দেশের তৈরি বিখ্যাত ল্যাম্বারগিনি গাড়ির আদলে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির দেখা পাওয়া যাবে। এবারের প্রদর্শনীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট ‘লি’।
মেলায় অংশ নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর দল ফ্রাইডে ল্যাব। তারা রোবট ভালোবেসে উদ্ভাবন করেছে বাংলায় কথা বলা হিউম্যানোয়েড রোবট ‘লি’। লি দেখতে অনেকটা মানুষের মতো। দুই পায়ে হাঁটতে পারে, বাংলা ভাষা বুঝতে পারে, কথা বলতে পারে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এমনকি মানুষের চেহারা মনে রাখতেও পারে। লি মানুষের সঙ্গে করমর্দন করে, স্যালুট দেয়।
প্রযুক্তিবান্ধব মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসেছে প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরাও ভিড় জমাচ্ছেন ডিজিটাল পণ্য এবং তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দেখতে। প্রদর্শনীতে ঘুরতে স্টার্ট আপ টপআপের প্রধান নির্বাহী দীন ইসলাম বলেন, ‘মেলায় তিনি রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীদের তৈরি রেসিং কার দেখে মুগ্ধ। তিনি গাড়িতে চড়ে ছবিও তুলেছেন। রোবটসহ যন্ত্রপাতি তৈরিতে বাংলাদেশের তরুণেরা এগিয়ে গেছেন। প্রতিবছর এমন আয়োজন তরুণদের অনুপ্রেরণা দেবে।’
‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’তে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্ডাস্ট্রি লিডার সামিট’ শিরোনামে গোলটেবিল বৈঠক। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের বিদেশি মুদ্রা আয়ের পরিমাণ যখন ক্রমেই বাড়ছে, তখন খাত ধরে তাদের খুঁজে এনে উদ্দীপনা দিতে বিডা ও আইসিটি বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
উদ্ভাবনে নারী নেতৃত্ব নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সারসহ এ খাতের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ শিল্পবিল্পবের শিক্ষা, ডিজিটাল নিরাপত্তার সুবিধা ও প্রতিকূলতা, চতুর্থ শিল্পবিল্পবের হার্ডওয়্যার শিল্পের চ্যালেঞ্জসমূহ, রোবট শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ।
মেলা ঘুরে এবং আয়োজকদের কাছ থেকে জানা যায়, মেলায় দেশীয় প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দিয়ে শীর্ষ নতুন উদ্যোগ খুঁজে পেতে মেলার আগে মাসব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচারমূলক কার্যক্রম চালানো হয়। সেখান থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন প্রদর্শিত হয় মেলায়। প্রদর্শনী শেষ হলে তরুণদের শীর্ষ ১০ উদ্যোগকে ১০ লাখ করে মোট ১ কোটি টাকা বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দেওয়া হবে।
এবারের মেলার স্লোগান ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রজেক্ট, এটুআই এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।