
রবিবার ● ১৯ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » উদ্ভাবকদের স্বীকতি দিলো বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক
উদ্ভাবকদের স্বীকতি দিলো বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক
‘উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি, রূপান্তরকে অনুপ্রেরণা’ প্রতিপাদ্যে গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) অডিটোরিয়ামে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন ‘বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫’ বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হলো পুরস্কার। সন্ধ্যায় চ্যাম্পিয়নদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তবর্তীকালীণ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী।
এ বছর সারাদেশ থেকে ২৫৫টি আইডিয়া প্রতিযোগিতায় প্রজেক্ট সাবমিট করে। এর মধ্য থেকে ৯০টি আইডিয়া প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। পরবর্তীতে ৯ অক্টোবর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) ও ১১ অক্টোবর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এ অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত মূল্যায়ন পর্ব শেষে ৩২টি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। চ্যাম্পিয়ন ছাড়া বাকিদের উইনার ও মেরিট ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়।
এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৯টি উদ্যোগ। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (মিস্ট) দলের উদ্ভাবন রাডসেফ; রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উদ্ভাবন বৃত্ত ডট এক্সওয়াইজেড; আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের কেয়ার হুইলচেয়ার এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন সেফ স্টেপ-কে চ্যাম্পিয়ন সম্মানা দেয়া হয়। আর ব্যক্তিগত উদ্যোগ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেবার জানালা- ইমপ্যাক্টফিউজ কোয়ালিশন।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠান শ্রেণীতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টানেলার্স এর জন্য ফাস্ট অ্যান্ডভান্সড অব বাংলাদেশ (এমটিবিএম) বোর্ড; ই-রিটার্ন সিস্টেম এর জন্য সিনেসিস আইটি পিএলসি’; কমপ্লিফাই এর জন্য রাইজআপ ল্যাবস এবং রোবোলাইফ বায়োনিক আর্ম প্রতিষ্ঠাতা রোবোলাইফ টেকনোলজিস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। আমরা প্রায়ই নিজেদেরকে হীনভাবে দেখি এবং পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। অথচ আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই রয়েছে অসীম সম্ভাবনা-তাদের উদ্ভাবনী শক্তিই পারে বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রযুক্তি মানচিত্রে আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে।’
বিশেষ অতিথি শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই এমন প্রোগ্রামের মাধ্যমে কিছু ইনোভেটিভ প্রজেক্ট বেরিয়ে আসুক, যেগুলোতে আইসিটি ডিভিশন বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। ইতোমধ্যে আইসিটি ডিভিশনের অনেক চলমান প্রকল্প রয়েছে এবং আমরা এমন কিছু টেকনোলজি প্রজেক্ট খুঁজছি, যেগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বাস্তব উপকার পাবে।’
বিশেষ অতিথি মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী (অব.) বলেন, ‘মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে তার প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান বের করাই প্রকৃত উদ্ভাবনের মূল উদ্দেশ্য। একই সঙ্গে প্রযুক্তিকে এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে, যাতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও ঘরে বসে এই ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠে।’
বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক (বিন) এর চেয়ারম্যান সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস-এর মাধ্যমে আমরা উদ্ভাবকদের এমন একটি প্লাটফর্ম দিতে চাই, যেখানে তারা তাদের আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারবে এবং জাতীয় স্বীকৃতি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ ও স্টার্টআপগুলো আরও এগিয়ে যাবে এবং বিনিয়োগ ও সহযোগিতার নতুন সুযোগ তৈরি হবে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক (বিন) এর জেনারেল সেক্রেটারি মুন এম. রাজীব বলেন, ‘বিন মূলত একটি সহযোগিতামূলক ইকোসিস্টেম তৈরি করছে, যেখানে মিড ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল, শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্ভাবক ও সাংবাদিকরা একসাথে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে উদ্ভাবনকে জাতীয় উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।’