
রবিবার ● ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » নতুন টেলিকম পলিসি: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা হুমকির মুখে
নতুন টেলিকম পলিসি: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা হুমকির মুখে
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর পক্ষ থেকে ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে টেলিকম পলিসির ৫টি ক্লজ দ্রুত সংশোধন করার আহবান জানানো হয়েছে।
৭.৪.৫ নং ধারায় বলা আছে- নেশনওয়াইড আইএসপি ও ডিভিশনাল আইএসপি এফটিএসপি (ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডার) হতে পারবে এবং জেলা ও উপজেলা/থানা আইএসপি জেলা আইএসপি হতে পারবে।
অপরপক্ষে টেলিকম খাতের নীতি-নির্ধারক বলে থাকেন, টেলিকম খাতে মুদি দোকানদার, অনভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা ঢুকে পড়েছে।
পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, থানা এবং উপজেলা পর্যায়ের আইএসপিরা ২০০৯ সালে লাইসেন্স পেয়েছে এবং তার আগে থেকে ব্যবসা করে আসছে। ফলে ২০ বছর ধরে যারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবসা করে আসছে তাদের একটি ইন্ডাস্ট্রি অভিজ্ঞতা আছে। লাস্ট মাইল ইউজারকে কিভাবে কোয়ালিটি অব সার্ভিস প্রদান করতে হয় সেই ব্যাপারে তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তাদের একটা রোল আউট হয়ে গেছে। ব্যবসার সম্প্রসারণ হয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের মেইনস্ট্রিমে আনার জন্য এটা উন্মুক্ত থাকা উচিত। অপরপক্ষে দেখা যায়, অনেক বিভাগীয় আইএসপি ছোট একটা মাত্র জেলায় ব্যবসা করে। তাদেরকে ফোর্সফুলি নেশনওয়াইড আইএসপি না দিয়ে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে না বলার থেকে এটা উন্মুক্ত থাকা উচিত, যার ইচ্ছা সে এফটিএসপিতে চলে যেতে পারবে, যার ইচ্ছা সে জেলা এফটিএসপিতে চলে যেতে পারবে।
৭.৪.৭ ধারায় বলা আছে- যারা শুধুমাত্র জেলা এফটিএসপিতে যাচ্ছে তাদেরকে বলা হয়েছে তারা শুধু ইন্টারনেট ও ডেটা সার্ভিস দিতে পারবে। ২০২৫ সালে এসে আমরা ইন্টারনেটের ব্যবহার দেখলে দেখতে পাবো ইন্টারনেটে অনেক ধরনের ডিজিটাল সার্ভিস (আইপি টেলিফোনি, আইপি-টিএসপি, টেলিমেডিসিন ইত্যাদি) উদ্ভাবন যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সার্ভিস লাস্ট মাইল গ্রাহকরা যেন পান সেজন্য বর্তমান সরকারও উৎসাহ দিয়ে আসছেন। ডিজিটাল সার্ভিস যেন জেলা আইএসপিরাও দিতে পারে এবং কোনও বৈষম্য যেন না থাকে।
এই ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ৩টি এনটিটিএন অপারেটরের প্রত্যেকের নামে-বেনামে এএনএসপি লাইসেন্স আছে। এটা থেকে ভুল বোঝাবুঝি হবে। অথরাইজড গ্রাহক কানেক্ট করতে পারবে এনটিটিএন অপারেটররা- বিগত সরকার এরকম একটা প্রজ্ঞাপন দিয়েছিলো। ওই প্রজ্ঞাপন অপব্যবহার করে এএনএসপি অপারেটরদের ডোমেইনে ঢুকে অনেক ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। এই ধারাটা কোনোভাবেই থাকা উচিত নয়।
৭.৭.৬ এবং ৭.৭.১১ ধারায় বলা হয়েছে- এনটিটিএন অপারেটররা ট্রান্সমিশন অপারেটর থাকবে, এএনএসপি অপারেটর হিসেবে এটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি, সাপোর্ট করছি। তবে এ বিষয়ে নীতি-নিরর্ধারকদের কাছে আমাদের প্রশ্ন, ২০২৫ সালেও যেখানে এনটিটিএন অপারেটররা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারেনি ওই এলাকাগুলো কি ইন্টারনেট সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে? ডিজিটাল বৈষম্য কি এখনও অবস্থান করবে? এই বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য যেখানে এনিটিটিএন অপারেটররা ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করেনি সেখানে এএনএসপি অপারেটররা যেন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারে।
নতুন টেলিকম পলিসি’র এই ধারাগুলো আইএসপি খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এতে এ খাতের সম্পূর্ণ দেশীয় বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়বে। পলিসিতে কয়েকটি সংশোধনী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার মান (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আইএসপিএবি মনে করে।