সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, মে ১৫, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
শনিবার ● ২৯ জুন ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » বাস্তবতার বাইরে গিয়ে নতুন বিমা কোম্পানির লাইসেন্স!
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » বাস্তবতার বাইরে গিয়ে নতুন বিমা কোম্পানির লাইসেন্স!
৪৯২ বার পঠিত
শনিবার ● ২৯ জুন ২০১৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাস্তবতার বাইরে গিয়ে নতুন বিমা কোম্পানির লাইসেন্স!

অর্থনীতির আকার ও ব্যবসায়ের সম্ভাবনার দিক বিবেচনায় নিলে আরও বিমা কোম্পানির অস্তিত্বের কোনো বাস্তবতা নেই দেশে। যে কোম্পানিগুলোকে আগের বারের আওয়ামী লীগ সরকার লাইসেন্স দিয়েছিল, সেগুলোর বেশির ভাগেরই অবস্থা এখন খারাপ। তেমন কোনো ব্যবসা নেই। কোনো সুশাসনও নেই এগুলোতে। দেড় যুগ আগে লাইসেন্স পাওয়া বিমা কোম্পানির বেশির ভাগই নামকাওয়াস্তে টিকে আছে।

এই যখন সার্বিক চিত্র, তখন আরও এক ডজন বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে শুধুই রাজনৈতিক বিবেচনায়। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। রাজনৈতিক বিবেচনাতেই ইতিমধ্যে নয়টি ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। এবার দেওয়া হচ্ছে বিমা কোম্পানির লাইসেন্স, যার প্রায় সবগুলোতেই প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সরকারদলীয় একাধিক মন্ত্রী ও সাংসদ রয়েছেন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক যেমন একটিও নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে নারাজ থেকেও শেষ পর্যন্ত নয়টি ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছে, বিমার ক্ষেত্রেও তা-ই হতে যাচ্ছে। লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা এতগুলো লাইসেন্স দেওয়ার পক্ষে না থাকলেও শেষ পর্যন্ত করার কিছু থাকছে না। কারণ, যেকোনো লাইসেন্স পাওয়াই নির্ভর করে সরকারের শীর্ষ মহলের চাওয়ার ওপর।

জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে আইডিআরএ থেকে একটি তালিকা পেয়েছে। আর বিষয়টি একান্তভাবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন লাইসেন্স, বেসরকারি টেলিভিশন ও ব্যাংকের লাইসেন্সের পর সরকারের বর্তমান মেয়াদে বিমার লাইসেন্সই হবে শেষ লাইসেন্স।

৭৫টি কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইডিআরএ বিমা কোম্পানির লাইসেন্সের জন্য দুই সপ্তাহ আগে শুনানি শেষ করেছে। এ থেকে বাছাই করে ইতিমধ্যে ১২টি কোম্পানির নামও চূড়ান্ত করেছে সংস্থাটি। দেশে আর কোনো বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়ার আদতেই বাস্তবতা রয়েছে কি না, আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদের কাছে গত বছর তাঁর একটি বিশ্লেষণমূলক সমীক্ষা চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। শেফাক আহমেদ বিশ্লেষণ করে অর্থমন্ত্রীকে তখন জানিয়েও দিয়েছিলেন যে আর বড়জোর দুই থেকে তিনটি জীবন বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই সাধারণ বিমা (নন-লাইফ) কোম্পানি নয়। অথচ নিজের যুক্তি ও পরামর্শের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই সংস্থাটিই এখন নতুন লাইসেন্স দিচ্ছে জীবন বিমার ও সাধারণ বিমা কোম্পানির।

জানা গেছে, দলীয় প্রভাবশালীদের তুষ্ট করতেই সরকারের চাপে আগের জায়গা থেকে সরে এসেছে আইডিআরএ। এমনকি বিমা কোম্পানির মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনেরও (বিআইএ) প্রবল আপত্তি রয়েছে নতুন বিমা লাইসেন্সের ব্যাপারে। দেশে বেসরকারি পর্যায়ে বর্তমানে ৪২টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে। জীবন বিমা কোম্পানি রয়েছে ১৭টি। মেটলাইফ অ্যালিকো রয়েছে একটি বিদেশি জীবন বিমা কোম্পানি। এর বাইরে সরকারি সংস্থা রয়েছে দুটি-সাধারণ বীমা করপোরেশন ও জীবন বীমা করপোরেশন। বেশ কয়েকটি সাধারণ ও জীবন বিমা কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের মতো পরিস্থিতি রয়েছে বলে এর আগে মত দিয়েছিল আইডিআরএ।

আইডিআরএর আহ্বানের আগেই অবশ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে বিমা কোম্পানির লাইসেন্স পেতে আবেদন পড়তে থাকে। ৬০০টি আবেদনের একটি তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আইডিআরএর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। যেগুলো পরে আর কোনো কাজে আসেনি। জানা গেছে, দলীয় বিবেচনায় লাইসেন্স যেমন দেওয়া হচ্ছে, তেমনি বাদও পড়ছেন অনেকে। বাঘা বাঘা ব্যক্তিও নতুন বিমা কোম্পানির লাইসেন্সের জন্য বিবেচিত হচ্ছেন না এবার। বিশেষ করে, কোনো ব্যাংক বা বিমা কোম্পানিতে ইতিমধ্যে মালিকানা রয়েছে, এ দফায় লাইসেন্সের জন্য তাঁরা মোটেই অগ্রাধিকার পাচ্ছেন না। কারণ, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পদের পুঞ্জীভূত হওয়ার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীও বেশ কয়েকবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি চাই না, দেশের সম্পদ গুটিকয় ব্যক্তির মধ্যেই থাকুক।’

হাল চিত্র: ২০১১ সালে বিমা কোম্পানিগুলোর সমন্বিত প্রিমিয়াম আয় ছিল আট হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। আর ২০০৬ সালে এর পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। মানে, ছয় বছরে প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে আড়াই গুণ। যদি জীবনবিমার প্রিমিয়াম ও সাধারণ বিমার প্রিমিয়াম আয় পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলেও মোটামুটি এই প্রবণতাই দেখা যায়। ২০০৬ সালে জীবনবিমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় ছিল দুই হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। আর ২০১১ সালে তা বেড়ে হয় ছয় হাজার ৫১০ কোটি টাকা। একই ভাবে জীবনবিমা প্রিমিয়াম আয় ২০০৬ সালে ছিল ৮৫০ কোটি টাকা। ২০১১ সালে তা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। ২০১২ সালের পূর্ণাঙ্গ উপাত্ত এখনো পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৬২টি বিমা কোম্পানি আছে। এর মধ্যে ৪৪টি সাধারণ বিমা বা আজীবন বিমা কোম্পানি। বাকি ১৮টি জীবনবিমা কোম্পানি। এই ১৮টির মধ্যে একটি হলো রাষ্ট্রীয় খাতের ‘জীবন বীমা করপোরেশন’। বাকিগুলো সব ব্যক্তিমালিকানাধীন। অন্যদিকে ৪৪টি সাধারণ বিমার মধ্যে একটি হলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ‘সাধারণ বীমা করপোরেশন’। বাকি ৪৩টি হলো বেসরকারি মালিকানাধীন।

সর্বশেষ পরিস্থিতি: শেষ পর্যন্ত ১০টি জীবন বিমা ও দুটি সাধারণ বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে। জীবন বিমার মধ্যে একটি রয়েছে বিদেশি (জাপানি) কোম্পানি। ভারতের লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এলআইসি) শেষ পর্যন্ত লাইসেন্স পাচ্ছে না। পাচ্ছে না পাকিস্তানি কোম্পানিও। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় আইডিআরএ এগুলোকে বিবেচনায় নিতে পারেনি।
তবে, লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে নিজের অবস্থানের বিরুদ্ধে কেন দাঁড়াতে হলো-জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ। তিনি শুধু এটুকু বলেন, বিমা দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় খাত। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ খাতে বিপুল পরিমাণ দক্ষ জনশক্তি গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। আর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই।

বিআইএর সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, আর কোনো বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়া উচিত হবে না। অন্তত সাধারণ বিমা কোম্পানির লাইসেন্স তো নয়ই।’ তবে তিনি এও বলেন, ‘আমরা যা-ই বলি না কেন, সরকার নিশ্চয়ই হিসাব করে দেখেছে যে আরও কিছু বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়া যায়, তাই দিচ্ছে।’
নতুন লাইসেন্স দেওয়ার চেয়েও বিমা খাতকে কঠোরভাবে পরিচালনার জন্য আইডিআরএর সক্ষমতা বাড়ানো বেশি জরুরি বলে মনে করেন শেখ কবির।

সূত্র- পিএ



পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
বাংলাদেশে র‌্যানসমওয়্যারের হুমকি প্রতিরোধ করছে ক্যাস্পারস্কি
বাজারে গিগাবাইটের ৪৯ ইঞ্চি কার্ভ গেমিং মনিটর
দুবাইভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটালের উপদেষ্টা হলেন আশিকুল আলম খাঁন
লাইসেন্সবিহীন ও অনিরাপদ সফটওয়্যার ব্যবহার বন্ধের আহবান বিএসএর
বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড পেলো বিঞ্জ ওয়েব ফিল্ম
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ
স্টার্টআপ বাংলাদেশ ও মনের বন্ধু’র মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
ভবিষ্যৎ স্মার্ট নাগরিক এবং লিডারশিপ তৈরির ক্ষেত্র হবে ডিআরএমসি: প্রতিমন্ত্রী পলক
সিংড়ায় ডিজিটাল পল্লী: স্মার্ট ভিলেজ এক্সপো অনুষ্ঠিত
২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে ভিসিপিয়াব নির্বাচন