সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ন ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
বৃহস্পতিবার ● ৮ মার্চ ২০১২
প্রথম পাতা » @নারী » আইসিটিতে সফল নারী
প্রথম পাতা » @নারী » আইসিটিতে সফল নারী
১৩৯৬ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৮ মার্চ ২০১২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আইসিটিতে সফল নারী

প্রতিবেদন: নাজনীন নাহার

সম্পাদনা: মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া রোকন

>> একজন প্রবীণ সাংবাদিক একবার আমাকে বলেছিলেন মেয়েরা যখন কোন রিপোর্ট করে সেটা আমি একটু অন্যভাবে মূল্যায়ন করি কেননা রিপোটিং এর প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ,একজন পুরুষের তুলনায় নারীর জন্য বেশ কষ্টসাধ্য। কথাগুলো যে কতটা সত্যি তা বোধ করি দেশের সকল নারী সাংবাদিক এমনকি পুরুষরাও বোঝেন। হয়তো মানেন না বা মানতে চান না। এই সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে গণমাধ্যম নারী সাংবাদিকরা এখন বেশ এগিয়ে। শুধু সাংবাদিকতায় নয়, যেকোন পেশায় একজন পুরুষের তুলনায় নারীকে অনেক বেশী মেধা এবং যোগ্যতার প্রমান দিতে হয়। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য কর্মক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীকে থাকতে হয় বেশী সচেতন। উচ্চপদস’ কর্মকর্তা তার প্রতি অধিক অনুগ্রহ যেমন তাকে অসসি’তে ফেলে আবার কর্মদক্ষতায় চোখের বালি হওয়াও তাকে সইতে হয়। সংসার অফিস, সন্তান পালন সবমিলিয়ে একজন কর্মজীবি নারীকে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করতে হয় দক্ষ পাঠচক্র। শুধু যদি কর্মক্ষেত্রে আসা যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলি তাহলে দেখা যায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে তার যুদ্ধ কতটা জটিল, নিজস্ব গাড়ীতে চড়ে অফিস যাওয়ার সৌভাগ্য যদি না থাকে তবে পাববিক ট্রান্সপোর্ট ই ভরসা, রিক্সা ট্রাক্সিতে যাওয়ার উপায় নেই আজকাল, ভিআইপি রোড, রিক্সা যাবেনা, মিটারে ট্রাক্সি যাবেনা, বাসে যাবার কথা ভাবা ও মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্নের মত। এটা যে কতটা স্বসি-কর সেটা যারা বাধ্য হয়ে বাসে চড়েন তারা বোঝেন। এমনি নানামুখী সমস্যার মাঝে আলোচনায় না গেলাম। আজ আমরা অন্যকথা বলি। আমাদের দেশের নারীরা এখন এসব সমস্যামেনে নিয়ে পা বাড়িয়েছে কর্মক্ষেত্রে এবং তারা তাদের মেধার পরিচয় দিয়েছেন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, পেশায়, ব্যবসায় এবং সামাজিক কর্মকান্ডে। পোশাক শিল্পে, ক্ষুদ্র ঋণ, ব্যাংকি, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষকতা, গবেষণা, টেলিকম সহ তথ্যপ্রযুক্তির অন্যান্যখাতে নারীরা রেখেছে তাদের যোগ্য অবদান, তবে অন্যান্য পেশার তুলনায় তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূরক হারে কম। এ চিত্র সারাবিশ্বেই। আমাদের দেশে মোট কর্মসংস’ানে মাত্র ৪% তথ্যপ্রযুক্তিতে। এতে নারীর অংশগ্রহণ সহজে অনুমেয়। খোদ আমেরিকায় ২০০৯ এর এক জরিপে দেখা গেছে তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ যত সামান্য। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের অবস’ান বেশ ভালো। তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। মেয়েকে ডাক্তারী না পড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং না পড়ানোর প্রবনতা এখন অনেকটাই কমে গেছে। আর এই পরিবর্তন ঘটেছে খোদ নারীদের যোগ্যতা প্রমানের মাধ্যমেই। আজ আমরা তেমনি কিছু নারীর কথা বলবো যারা তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্নখাতে প্রমান করেছেন নিজেদের মেধা, যোগ্যতা হয়ে উঠেছেন এক একজন অসাম্মানা করেছে সকল বাধাকে জয়। কি পড়াশুনা কি পেশা, কি ব্যবসায় কি গণমাধ্যমে তারা বার বার প্রমান করেছেন তাদের যোগ্যতা ও মেধা।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই সকল নারীদের কর্মঅভিজ্ঞতা এবং অর্জন আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরনা ,যাদের পদাংক অনুসরনে আজকের বালিকা হবে আগামী সফলতম এক নারী। তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবি চিকিৎসক, শিক্ষক কিংবা গামেন্টর্সকর্মী নয় সর্বক্ষেত্রে বাড়বে নারীর অংশগ্রহণ হাত বাড়িয়ে এক নারী হবে অন্য নারীর জন্য আশ্রয় ও পথপ্রদর্শক। সহযোগিতায় থাকবে পুরুষ সমাজ কেননা নারী মমতাময়ী মা, প্রিয়তমা, আদরের বোন, মায়বী কন্যা কিংবা বাকপটু সহকর্মী । জয় হোক নারীতার।
আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

ড. সুরাইয়া পারভীন
প্রাক্তণ চেয়ারপারসন
সিএসই বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সহসভাপতি (বিডব্লিউআইটি)

ছোটবেলা হতে স্বপ্নছিল শিক্ষক হবার। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস’ত করেছেন সকল প্রতিকুলতার সংগে লড়াই করে। পৌঁছেছেন নিজের লক্ষ্যে। শিক্ষাজীবনে তুখোড় এ নারী কম্পিউটার সাইয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনার্স এবং মাষ্টার্স দুটোতে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। প্রমান করেছেন নিজের মেধাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষ করে ভারতের খড়গ পুর আইআইটি হতে অর্জন করেছে পিএইচডি ডিগ্রী। এরপর মেধাবী এই তরুনী নিজেকে ব্যস- রেখেছে দেশ বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা কাজের সাথে। তার গবেষণার কার্যক্রম তৎকালে দেশ বিদেশের বেশ কিছু জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছিল। তখনও তিনি হাটছেন তার স্বপ্ন পথে। সহপাঠীদের কাছে মেধার জন্য যেমন প্রিয় ছিলেন তেমনি ছিলেন ঈর্ষনীয়। সে সময়ে সিএসই তে পড়া মেয়ের সংখ্যাও ছিল সীমিত।
শিক্ষক হবার স্বপ্ন পূরনের তাকে বেশীদিন অপেক্ষা করতে হলো না ১৯৯৪ সালেই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের পরিচিত ক্যাম্পাসে প্রভাষক হিসাবে যোগদেন তিনি। তারপর দীর্ঘ পথচলা। শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় এ শিক্ষক খুব সময়েই পৌঁছে যান নিজ বিভাগের সর্বোচ্চ আসনে। মেধা মননশীলতা তার সততায় অর্জন করেন নিজের অভিষ্ট লক্ষ্য।

তিনি মনে করেন একজন নারীর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব তার পরিবার, কেননা একটি শিশু স্বশিক্ষায়, সুশিক্ষায় বড় করার অনেক দায়িত্বই নারীর। নিজের সফলতায় তাই পরিবারের ভূমিকাকেই বড় মনে করেন ডঃ সুরাইয়া। তিনি চান তার সস-ান তাকে ছাড়িয়ে যাক এবং সেই সাথে এটা বিশ্বাস করেন এ চাওয়াকে পাওয়াতে রূপান-র করতে মা হিসাবে তার দায়িত্ব অনেক। সেজন্য এই পেশাতে আসা সংসারকে প্রয়োজনীয় সময় দিয়ে কর্মক্ষেত্রের সময়টুকুর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারা একজন নারীর জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি। এর জন্য অবশ্য সামাজিক এবং পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। একসময় মেয়েরা সিএসই পড়বে এটা অভিভাবকদের কাছে খুব একটা সহজ ছিলনা। এখন সময় বদলেছে। এই বদলানোতে নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। তথ্যপ্রযুক্তিতে মেয়েদের আরো এগিয়ে আসতে হবে। আর যারা আছেন তারাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব হলো নতুনদের এখাতে আগ্রহী করে এবং কাজের যোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করা। তিনি বিশ্বাস করেন কর্মক্ষেত্রে যদি শিশু দিবা যত্নকেন্দ্রের সুবিধা টুকু দেয়া যায় তবে তথ্যপ্রযুক্তি কেন সকল ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সায়েন্স এন্ড আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিটি সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, একাডেমিক উপদেষ্টা হিসাবে যুক্ত আছেন স্টামফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। দায়িত্ব পালন করছেন বিডব্লিউ আইটি সহসভাপতি (একাডেমী) হিসাবে।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

লুনা শামছুদ্দোহা
চেয়ারপার্সন
দোহাটেক নিউমিডিয়া
প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশ ওমেন ইন আইটি (বিডব্লিউ আইটি)

তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং কর্মজীবি নারীদের কাজের সহায়তা করে তাদের লক্ষ্য অর্জনে তাদের সাহায্য করা আমার লক্ষ্য বলেছিলেন লুনা শামছুদ্দেহা, পরিশ্রম আর মেধা ও যোগ্যতার সংমিশ্রনে তথ্য প্রযুক্তি একজন সফল নারী লুনা শামছুদ্দোহা।
১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আন-র্জাতিক সম্পর্কে মাষ্টার্স শেষ করেন লুনা। কর্মজীবনের শুরু ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইংরেজী ভাষার শিক্ষক হিসাবে। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর ফেরেন নিজের ক্যাম্পাসে। যোগদেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা গবেষণা কেন্দ্রে। কোন কিছুকে অসম্ভব মনে করতেন না তিনি। পরিশ্রম আর যোগ্যতায় সবই সম্ভব বলে মনে করেন লুনা।
চাকুরী ছেড়ে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ১৯৮৫ সালে জড়ান ব্যবসার সঙ্গে। সে সময় মেয়েরা ব্যবসা করছে এটা ছিল ব্যতিক্রম। লুনা আসলেই ছিলেন অন্যের চেয়ে আলাদা। ১৯৯২ সালে চেয়ারম্যান হিসাবে যোগদেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়ার সঙ্গে। ইন্ডিপেন্ডেট সফটওয়্যার ভেন্ডর কোম্পানী দোহাটেক নিউ মিডিয়া তার নেতৃত্বে আজ সফলতার শীর্ষে। সফটওয়্যার পণ্য ব্যবসায় নারী হিসাবে লুনা অন্যতম অগ্রজ।
এছাড়া তার প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক বাজার হলো ইউরোপ এবং আমেরিকা। সারাবিশ্বে ২৪টি দেশে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা দান করছেন আমাদের দেশীয় এই প্রতিষ্ঠান। খোদ আমেরিকার ৭০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে দোহাটেকের নিজস্ব ডেভেলাপড সফটওয়্যার। শুধু দেশের বাইরেই নয় দেশীয় বাজার দোহাটেকের রয়েছে ব্যবসায়িক সুনাম। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানের ই গর্ভানেস ভিত্তিক সফটওয়্যার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ভোটার আইডি কার্ড এবং তথ্য সংরক্ষণ সফটওয়্যার। যার জন্য পেয়েছে প্রশংসা সনদ। উল্লেখযোগ্য গ্রাহক তালিকায় আছে বিশ্বব্যাংক, ইউএস পোষ্টাল সার্ভিসসহ আরো অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠান।

দেশে তথ্যপ্রযুক্তিখাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় অগ্রজের সফলতাকে অনুজদের জন্য বাধা অতিক্রমের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার প্রয়াসে ২০১০ সালে তার নেতৃত্বে দেশে প্রথমবারের মত প্রতিষ্ঠিত হয় তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী নারী সংগঠন বিডব্লিউ আইটি। দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে শীর্ষ স’ানীয় নারীদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে প্রযুক্তিখাতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ব্যক্তি দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্য।
দেশে বিদেশে তিনি পেয়েছেন তার কাজের স্বীকৃতি।২০০৭ ডেনবার সালে মাইক্রোসফটের গ্লোবাল পার্টনার কনফারেন্স ডব্লিউ পিসিতে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়। একই সালে ইউরোপিয়ান ওমেন ইনডেনটর এন্ড ইনোভেটর নেটওয়ার্কের বার্ষিক সভায় তাকে ওমেন ইউনিক রোল ইন ড্রাইভিং ইনোভেশন, লিডার হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। অর্জন করেন গ্লোবাল রোল মডেল খেতাব।
এছাড়াও তিনি পরিচালক হিসাবে জড়িত আছেন অগ্রণী ব্যাংকের সংগে। সদস্য হিসাবে কাজ করছেন এফবিসিসিআই, এ্যামচাম, ইউসেপ এর সঙ্গে। ট্রাষ্ট বোর্ডেরসহ চেয়ারম্যান হিসাবে যুক্ত আছেন ইনডিপেন্ডন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। এছাড়াও দেশে বিদেশে জড়িত আছেন বেশ কিছু কর্মকান্ডের সঙ্গে।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

ফারহানা এ রহমান
সিইও এবং চেয়ারপারর্সন
ইউওয়াই সিস্টেমস লিঃ
সহসভাপতি (বিডব্লিউআইটি)

আউটর্সোসিং এবং ফ্রিল্যান্সিং এ বিশ্ববাজারে যথেস্ট সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের। ইতিমধ্যে আমাদের মেধাবী তরুণ সমাজ স্ব-উদ্যোগেই আউটর্সোসিং এ অর্জন করে বিশ্ব আন-র্জাতিক সুনাম। আমাদের তরুণরা প্রমান করেছে আমরাও পারি। এ অর্জনে তরুণদের সঙ্গে তরুনীরাও রয়েছে। দেশে সফটওয়্যার খাতে নিজের অংশগ্রহণসহ দেশের অর্থনীতিতে কর্মসংস’ানে নিজস্বভাবে সহযোগিতা সর্বোপরি নিজস্ব মেধাকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালে ফারহানা এ রহমান নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান করেন ইউওয়াই সফটওয়্যার লিঃ কোম্পানী। সে সময়ে সফটওয়্যারে নারী উদ্যোক্তা ছিল যথসামান্য। প্রতিবন্ধী ছেলে সন-ানের জননী ফারহানা মনে করেন সয়মানুবর্থিতা আর শৃঙ্খলাই মানুষ এগিয়ে নিয়ে যায় বহুদুর । সস-ানের দেখাশুনা আর এমন এক চ্যালেঞ্জিং পেশায় সময়কেই সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। সকল বৈরীতায় নিজেকে সহজভাবে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতাই নারী অন্যতম দক্ষতা বলে মনে করেন তিনি। সে সঙ্গে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের কর্মপরিচালনাই এবং দক্ষ মানব সম্পদ পরিচালনার কাজে পারদর্শীতা ফারহানা রহমানের অন্যতম প্রধান যোগ্যতা। তার নেতৃত্বে খুব অল্প সময়ে তার প্রতিষ্ঠান অর্জন করে ব্যবসায়িক সুনাম। মূলত: সফটওয়্যার ডেভেলাপ, আউটর্সোসিং ওয়েব সহ বিভিন্ন কাজে তার প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে দেশে বিদেশে নিজস্ব অবস’ানকে করেছেন সুদৃঢ়। আউটর্সোসিং ও সফটওয়্যার এ দেশে বিদেশী ব্যবসায়িক পাটনার হিসাবে কাজ করছেণ গ্রামীণ ফোন, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংকসহ আরো অনেকের সঙ্গে। আন-র্জাতিকভাবে কাজ করছেন সাপকন সিস্টেম, জেমসপার অনলাইন। লিমরি ডটকমসহ আরো অনেকের সঙ্গে।
ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের পাশাপাশি দেশের সফটওয়্যার শিল্প ব্যবসার উন্নয়নে যোগ দিয়েছেন বেসিসে। সেখানেও নিজস্ব যোগ্যতায় অর্জন করেছেণ নেতৃত্ব। ২০১০ সালে বেসিসের প্রথম নারী পরিচালক হিসাবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন ফারহানা। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন সংগঠনটির সহসভাপতি হিসাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি নারীদের আগ্রহী করা সেই সাথে সহযোগিতার মানসে ফারহানা যোগদেন বিডব্লিউ আইটিতে। সহ সভাপতি হিসাবে কাজ করছেন প্রযুক্তিখাতে নারী উন্নয়নে। এছাড়াও সামাজিক দায়িত্ব পালনে সাধারণ সম্পাদক যুক্ত আছেন অটিজম শিশু কল্যাণ সমিতির সঙ্গে। যে কোন বাধা অতিক্রমে নিজের যোগ্যতাকে অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে বিবেচনা করেন ফারহানা।

ex_sonia.jpg

সোনিয়া বশির কবির
কান্ট্রি ম্যানেজার
ডেল বাংলাদেশ
সহসভাপতি বিডব্লিউ আইটি

আমেরিকার সিলিকন ভ্যালীতে পড়াশুনা এবং সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ শেষে কাজ শূরু করেন ওরাকলে। পরবর্তীতে কাজ করে সান মাইক্রো সিস্টেম আমেরিকায়। দীর্ঘ ২০ বৎসর আমেরিকায় বাস করেন সোনিয়া। সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করেছে ১৫ বৎসর। ১৫ বৎসরের কর্ম অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে সিওও হিসাবে যোগদান করেন দেশের শীর্ষস’ানীয় ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আমরা নেটওয়ার্কে। বুদ্ধিমতী, কমদক্ষ, পরিশ্রমী এ নারী অল্প সময়ে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য সেবা খাতে হয়ে উঠেন পরিচিত। তার কর্মদক্ষতায় পরবর্তীতে তিনি যোগদেন মাইক্রোসফট এ দক্ষিণ এশিয়ার বিজনেজ ডেভেলাপম্যান্ট ডাইরেক্টর হিসাবে । দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে নিজের যোগ্যতা প্রমান করেন সোনিয়া। দেশ বিদেশে ব্যবসা উন্নয়ন পণ্য বিপনন ও বাজারজাত করনে তার অভিজ্ঞতা ঈর্ষনীয়। বিভিণ্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিকে করেছেন পূর্ণ। বর্তমানে কর্মরত আছেন ডেলের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসাবে।
কাজের প্রতি সততা, এবং বিচক্ষনতা সেই সঙ্গে অভিজ্ঞতার প্রয়োগই আনতে পারে সফলতা- বলে বিশ্বাস করেন সোনিয়া, দেশে বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতায় তিনি মনে করেন আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ অন্যান্য খাতের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং কিন’ মেধা থাকলে, সেই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে ইতিবাচক বোঝাপোড়ায় যেকোন নারী এক্ষেত্রে অর্জন করতে পারেন সফলতা। বাংলাদেশে প্রযুক্তিখাতে যথেস্ট উন্নয়ন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। দেশের বাজারে বাজারে প্রযুক্তি পণ্য বিপনন প্রবৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক উন্নয়ন খুব যে সহজ তা নয় বরং বেশ চ্যালেঞ্জিং তবে নারী পুরুষভেদে নয়। নিজেকে কখন পুরুষের চেয়ে আলাদা করে ভাবেননা তিনি সকল কর্ম পরিবেশে নিজের জন্য আলাদা জায়গা করে নেয়াটা পেশাজীবি নারীদের প্রাথমিক যোগ্যতা হিসাবে বিবেচ্য তার কাছে। সর্বোপরি এগিয়ে আসতে হবে সকলকেই অনুকুল পরিবেশ যেকেউ ভাল ফলাফল দিতে পারবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বোধ হতে কাজ করছেন বিডব্লিউ আইটি সহ-সভাপতি হিসাবে। এছাড়াও সদস্য হিসাবে যুক্ত আছেন এআইএসডি বিএফই ডব্লিইএ বিসিবি এবং এডব্লিউজি ডিসির সংগে।
আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

রুবাবা দৌলা মতিন
সি এস ও এয়ারটেল বাংলাদেশ
পরিচালক (বিডব্লিইআইটি)

বিদেশে এমবিএ শেষ করে দেশে ফিরে গ্রামীণ ফোনে যোগদেন রুবাবা। মেধা এবং যোগ্যতায় অল্পসময়ে গ্রামীণ ফোনে নিজের অবস’ানকে করেন সৃদঢ়। দীর্ঘ ১২ বৎসরে কর্মজীবনে চেষ্টা করেছে নিজের সর্বোচ্চ মেধার ব্যবহারের ।তার নেতৃত্বে গ্রামীণ ফোনে গ্রাহক সেবা পায় ভিন্নমাত্রা, ব্যবসায়িক জ্ঞান প্রয়োগে তার নেতৃত্বে গ্রামীণ ফোনে চালু হয় নাগরিক সেবা বিল প্রদান, মোবাইল ব্যাংকি, জিপি পোর্টাল, ডিজুস, পে ফরশি, সেল বাজার, কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার হেলথ সার্ভিসসহ বিভিন্ন মূল্য সংযোজন সেবা। দেশের টেলিকম শিল্পে এই সেবাগুলো তৈরী করে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এ পণ্য সেবার বিপিনন এবং বাজারজাত করনে এর নারী কর্মকতার অবদান অনস্বীকার্য। গ্রামীণফোনের আন-র্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন, বাজারে শেয়ার বৃদ্ধিতে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন রুবাবা। যোগ্যতা এবং মেধার মূল্যায়নে অর্জন করেছেন দেশ বিদেশে বহু এওয়ার্ড সম্মাননা এবং সুনাম। নিজের সংগে নিজের বোঝাপড়া সেই সংগে নিজের লক্ষ্য মাত্রা ঠিক করে এগিয়ে যাওয়ার নামই সফলতা বলে বিশ্বাস করেন রুবাবা। নিজেকে যোগ্য হিসাবে প্রমান করাটাই নারী পেশাজীবিদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন রুবাবা। আর তা পূরনে প্রয়োজন প্রবল আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রম। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৭ এবং ২০০৮ দুই বৎসরই “বেষ্ট ইউজ অফ মোবাইল ফর স্যেশাল এন্ড ইকোনমিক ডেভেলপম্যান্ট” কেটাগরিতে রুবাবা অর্জন করেন থ্রিজি এস এম গ্লোবাল মোবাইল এওর্য়াড। ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট পর্যায়ে মোবাইল কন্টেন্টএ অর্জন করেন শীষ ৫০ নারীর একজন হবার খেতাব। ২০০৬ সালে, ভূষিত হয় বেগম রোকেয়া শাইনিং পারসেনালিটি এওয়ার্ড। ২০০৭ এ অর্জন করেন অন্যান্য দেশে সেবা দশ নারীর খেতাব, এছাড়াও তার অর্জনের ঝুড়িতে রয়েছে মোবাইরে এশিয়ায় সেবা ৫ ক্ষমতাশারী নারীর খেতাব, বর্তমানে কাজ করছেন এয়ারটেলের প্রধান সেবা কর্মকর্তা হিসাবে। পণ্য ব্যবসা ব্যবস’াপনা গ্রাহক সেবা, বিপনন ও পণ্য সেবার ব্র্যান্ডিং ও প্রমোশনাল পরিকল্পনা এবং প্রয়োগে রুবাবা’র রয়েছে যুগব্যাপী অভিজ্ঞতা যা তার বর্তমান অবস’ানকে করেছে মজবুত।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

লায়লা চৌধুরী
সিইও
গ্রামীণ সল্যুশন লিমিটেড

টেলিকম খাতে সাধারণত নীতিনির্ধারণের জায়গায় নারীর অংশগ্রহণ সীমিত। তার মধ্যে যে কয়জন এই সীমা অতিক্রমকরে সব যোগ্যতায় পৌঁছেছেন উচ্চপদসহ ও নীতিনির্ধারণের স’ানে লায়লা চৌধুরী তাদের একজন।
২৯ বৎসরের সুদীর্ঘ কর্মজীবনে ১৮ বৎসর তিনি কাজ করেছেন গ্রামীণফোনের কাস্টমার রিলেশন এর মানবসম্পদ উন্নয়নের পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন তিনি যোগ্যতার সঙ্গে কল সেন্টার, সার্ভিস সেন্টার রেভিনিউ এবং বিলিংয়ের মতো বিভাগে কাজ করেছেন অর্জন করেছেন গ্রাহক সন’ষ্টি।
এছাড়াও তিনি টেলিকলসান্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান এবং একটেল রিভেম্প প্রজেক্টের সিনিয়র উপদেষ্টা।
২১ বৎসর কর্মজীবনে তিনি দক্ষতা অর্জন করেছেন টেলিকম ছাড়ার সফটওয়ার ডেভেলপম্যান্ট এবং বিপিও আউটসোসিং এ। বর্তমানে সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন গ্রামীণ সল্যুশন লিমিটেড। ৬৫ হাজার কর্মচারী সহ গ্রামীণ পরিবারের ১২০ এর বেশী সফটওয়ার ডেভেলপার কাজ করছে তার তত্বাবধানে । আউটসোসিং সেবা প্রদান করে আ সছে আমেরিকা, ইউরোপে ।।যোগ্যতা এবং মেধার মূল্যায়নে অর্জন করেছেন দেশ বিদেশে বহু এওয়ার্ড সম্মাননা এবং সুনাম।
২০০৬ সালে মানব সম্পদ উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকার জন্য অর্জন করেন বিএসটিডি এওর্য়াড ।এছাড়া ২০০৮ সালে অর্জন করেন হুজ হু ইন্টারন্যাশনাল সম্মাননা ।

পেশাগতভাবে সফল এ নারীর যখন এ অঙ্গনে পা রাখেন তখন তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। আজ এ অঙ্গনে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে এটা তার কাছে আনন্দের ।অনেক প্রতিকুলতায় নারীদের এ অর্জন । ইচ্ছা আর কর্মদক্ষতা মেধা থাকলে নারী বা পুরুষ কাউকে আটকাতে পারে না কোনো প্রতিবন্ধকতা। লায়লা চৌধুরী তারই উদারণ।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা
নাজনীন নাহার
সম্পাদক
টেকওয়ার্ল্ডূ বাংলাদেশ
সহ-সভাপতি, বিআইজেএফ

শৈশব কৈশারে কেটেছে কুমিল্লায়। নওয়াব ফয়জুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষায় ৩য় স’ান অধিকার করেছিলেন। মৌখিক পরীক্ষা প্রধান শিক্ষিকা জিজ্ঞেস করেছিলেন তোমার জীবনের লক্ষ্য কি? অনেকক্ষণ চিন-া করে বলেছিলেন পুলিশ অফিসার হব। বাবা ছিলেন তখন ডিআইও (ওয়ান)। সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার ইডেন কলেজ হতে অর্থনীতিতে সন্মান এবং মাস্টার্স শেষ করেন। পরবর্তীতে প্রেস ইনস্টিটিউট হতে সাংবাদিকতায় উচ্চতর ডিপ্লোমা পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে ২য় স’ান অধিকার করেন নাজনীন নাহার।
অধ্যায়নত অবস’ায় ১৯৯৯ সালে কাজ শুরু করে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লি: বা বাংলা ডটনেট (দেশের প্রথম আইএসপি) এর প্রকাশনা পিসিওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে। রিপোর্টিংয়ের হাতেখড়ি পিসিওয়ার্ল্ডে কাজ দিয়ে। পিসিওয়াল্ডে তৎকালীন সম্পাদকীয় চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত এনায়েত উল্যা খান (সম্পাদক সাপ্তাহিক হলিডে)
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টে (আইএফজে) আয়োজনে দেশে এবং দেশের বাইরে নেপালে ও ভারতে সাংবাদিকতা এবং রিপোর্টিংয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৯৯ সাল হতে ২০১০ সালে জুন পর্যন- এই দীর্ঘ সময়ে তিনি আইএসএনের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রধান হিসেবে আইএসএনের পণ্য সেবার বাজার বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে নতুন নতুন মূল্য সংযোজন সেবার উদ্ভাবনে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন। দেশীয় বাজারে এক মাত্র পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি তথ্যপ্রযুক্তি ম্যাগাজিন ‘পিসিওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে’ ম্যানেজার অপারেশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার নেতৃত্বে এই বিদেশি ম্যাগাজিনটি দেশীয় বাজারে শীর্ষ ম্যাগাজিনের তালিকায় পৌঁছে। তথ্য প্রযুক্তি গণমাধ্যমে এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং দেশের কর্মসংস’ান সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১০ সালে নিজ উদ্যোগে প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে প্রকাশ করেন টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নামে তথ্যপ্রযুক্তি ম্যাগাজিন। দেশীয় বাজারে একজন নারী সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি ভাষায় এটি প্রথম পূর্ণাঙ্গ তথ্যপ্রযুক্তি ম্যাগাজিন। অল্প সময়ে ম্যাগাজিনটি পৌঁছে গেছে পাঠক হৃদয়ে। ভিন্ন ধারার এই প্রকাশনাটি সমৃদ্ধ করেছে আমাদের দেশের প্রযুক্তি সংবাদপত্র বাজারকে।
অল্প সময়ে এই বয়সে একটি প্রকাশনায় চ্যালেঞ্জের সাথে তাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে বিভিন্ন প্রতিকূলতা। কিন’ পরিবার এবং আপনজনদের উৎসাহ এবং সহকর্মীদের সহযোগিতা তার এই পথচলা। কাজের প্রতি সততা আর একাগ্রতা সফলতার মূল আর সর্বোপরি পরিবারের সহযোগিতা।
তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি আউটসোসিং কিংবা ওয়েব ডেভেলাপম্যান্টসহ সফটওয়্যারের বিভিন্ন কাজ মেয়েরা ঘরে বসেই করতে পারেন। তাই এখাতে মেয়েদের আরো এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
প্রতিষ্ঠানিক সকল কাজের পাশাপাশি তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশ আইসিটি জানালিষ্ট ফোরামের সহসভাপতি হিসোবে। ২০০৩ সালে একমাত্র নারী তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিক হিসেবে এই সংগঠনের সদস্যদের পদ গ্রহন করেন। পরবর্তীতে এই সংগঠনের নির্বাচিত অর্থ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে সদস্য হিসেবে যুক্ত আছেন বিডব্লিউ আইটির সঙ্গে।
তিনি মনে করেন প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় নারীদের পুরুষের তুলনায় আরো বেশি পরিশ্রমী আর দক্ষ হতে হয় যোগ্যতা প্রমাণে দূর করতে হয়েছে পেশাগত বাধা।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

আনা ফারিহা
সিএসইতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম
শিক্ষাবর্ষ ২০০৬-২০০৭
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বিভাগে অনার্স ফাইনালে ১৬ বৎসরের এবারই (২০০৯-২০১০) প্রথম কোন মেয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছে। এই সংবাদ আনন্দের। আমাদের মেয়েরা বরাবরই পড়াশুনা কিংবা মেধার লড়াইয়ে প্রমান করেছে তাদের যোগ্যতা। এই দুরন- মেধাবী শিক্ষার্থীর নাম আনা ফারিহা। ভাল ফলাফলের ধারাবাহিকতায় আনা ফারিহা বরাবরই সন’ষ্ট করেছেন পিতামাতা এবং অবিভাবকদের। ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী আনা পড়-শানার শূরুটা হয়েছে কুষ্টিয়াতে। কুষ্টিয়া গার্লস স্কুল হতে ২০০২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মেধা তালিকায় ৩৯ তম স’ান অর্জন করেন ফারিয়া। সে ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অর্জন করেন ৪৪ তম স’ানটি। ছোটবেলা হতে গনিতের জটিল সমস্যা সমাধানে মজা পেতেন ফরিহা। উৎসাহ দিতেন বাবা-মা। গণিত সমস্যার সমাধান সহ যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে আগ্রহী ফারিয়া নিজেকে ব্যস- রাখেন জ্ঞান চর্চায়। মেধাভিত্তিক যেকোন প্রতিযোগিতায় রয়েছে তার আগ্রহ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসসি পড়ার ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়নি বলে জানান ফারিহা। সময় অনেক বদলেছে। সহপাঠী, শিক্ষকদের কাছ থেকে পেয়েছেন আন-রিক সহযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়কালীন সময়ে মনোযোগী ও মেধাবী ছাত্রী হিসাবে শিক্ষকদের কাছে বরাবরই প্রিয় ছিলেন আনা। সিএসই কেবল নয় যেকোন বিষয়েই ভাল ফলাফলের জন্য প্রয়োজন অধ্যবসায় এবং মনোযোগ । ফারিহা মনে করেন আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তিখাতে রয়েছে যথেস্ট সম্ভাবনা। নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে এখানে অনেক কিছুই করা সম্ভব। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ মানুষকে এনে দেয় সফলতা। আমাদের দেশে বহু প্রযুক্তি পণ্য সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা মেধাবী সিএসই গ্রাজুয়েটের কাজের সুযোগ দিতে আগ্রহী, সেখানে কেবল নিজের যোগ্যতা টুকু প্রমান করা প্রয়োজন- বলেন আনা। এছাড়া আউট সোসিং এর রয়েছে অপার সুযোগ।
সর্পোপরি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে সফলতায় আগ্রহী আনা ভবিষ্যতে একজন সফল সিএসই পেশাজীবি হতে চান এবং নারীদের জন্য তৈরী করতে চান কর্মসংস’ান ।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

হাবিবা নাসরিন রিতা
ডাইরেক্টর অপারেশন
ইউনিক বিজনেস সিস্টেম লি:(ইউবিএস)

ছোট বেলা হতে তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গণে বেড়ে উঠা। বাবা মো:আব্দুল হাকিম কাজ করতেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইউনিক বিজনেস সিস্টেম লি:। মূলত; হিটাচি এবং এমএমআই সহ বিভিন্ন বিশ্ববিখ্যাত নামকরা প্রযুক্তি পণ্যে পরিবেশক হিসাবে কাজ করছে ইউবিএস।ছোট বেলা মাথায় রঙিন ফিতেতে পনিটেলে বাবার অফিস দেখতে আসতেন তিনি। হাত ছুয়ে দেখতেন বাবার লেপটপ আর কম্পিউটার মনিটর। হাবিবা নাসরিন রিতা ২০০৩ সালে আন-র্জাতিক বাণিজ্যে এমবিএ শেষ করে শিক্ষানবিশ হিসেবে যোগদেন এক্সিম ব্যাংকে। প্রযুক্তির সাথে বেড়ে উঠা হাবিবাকে ব্যাংকি পেশা খুব একটা টানতে পারেনি । বাবার উৎসাহ আর প্রযুক্তির প্রতি তার প্রেম ২০০৫-এ যুক্ত হন প্রযুক্তি পণ্য ব্যবসার সংগে। বিজনেজ ডেপলাপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করে ব্যবসা পরিধি বিস-ার করেন অল্প সময়ে। পণ্যের তালিকায় যোগ হয় আরো কিছু আস-র্জাতিক পণ্য সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের শাখা বিস-ার করে ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে। অল্পসময়ে নিজ দক্ষতায় পদোন্নতি ঘটে পরিচালক হিসাবে। রাজধানীর বাইরে পণ্যের বাজার বৃদ্ধিসহ সাধারণ মানুষের হাতের কাছে পণ্য সেবা পৌঁছে দিতে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য। ব্যবসায়িক পণ্য প্রশিক্ষণে বেশ কবার ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন দেশে। অর্জন করেছেন জ্ঞান যা কাজে লাগিয়েছেন ব্যবসায়িক সফলতায়। বর্তমানে দেশে হিটাটি পণ্যের অন্যতম পরিবেশক হিসাবে ইউবিএস অর্জন করেছে ব্যবসায়িক সুনাম। সংসার সামলে একমাত্র ছেলে সস-ানকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন ” সময় ব্যবস’াপনায় নারী পুরুষ যেকোন পেশাদারীদের জন্য অত্যাবশরকীয় । সন-ানকে কোয়ালিটি টাইম বা কাজের ফাঁকের সময়টুকুর সদব্যবহার করতে পারলে দুদিক-ই ম্যানেজ করা সম্ভব । এক্ষেত্রে পরিবারের সহযোগিতা এবং কর্তার সঙ্গে বোঝাপড়াটা জরুরী । সহজ কথা সহজ করে বললে অনেক কাজ-ই সহজ হয় ।

তথ্যপ্রযুক্তিতে মেয়েদের কাজ করার পরিবেশ আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে বলে আমি মনে করি । এ খাতে যত বেশী নারীর অংশগ্রহন বাড়বে ততই সমস্যা কমে যাবে ।
প্রতিষ্ঠানিক সকল কাজের পাশাপাশি তিনি সদস্য হিসেবে যুক্ত আছেন বিডব্লিটআইটির সঙ্গে।

আইসিটির বীরাঙ্গনা যারা

রুমেসা হোসেন
প্রধান বিপিনন কর্মকর্তা,টেলিকমিউনিকেশনস
জিপিআইটি
কোষাধ্যক্ষ, বিডব্লিটআইটি

ছোটবেলা হতে মেয়েদের গড়ে তোলা হয় আলাদা ভাবে । নিরাপত্তাহীনতা ও পরাধীনতার বিষয়টি তখন হতে ঢুকিয়ে দেয়া হয় তাদের ভেতরে । বিধিনিষেদের মাঝে বেড়ে উঠে তারা । নিজেকে আলাদা করে বা চ্যালেঞ্জ্‌্ি‌্‌ং
কিছু করার ইচ্ছা তখন হতো । মালোয়শিয়ার মেরীল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ শেষ করে ১৯৯৪ সালে যোগ দেন আইবিএম ডব্লিউটিসিতে। পন্য বিপিনন তখন মেয়েদের জন্য যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ছিল । ছেলে সহকর্মীদের সংগে পল্লা দিয়ে এগিয়ে যান রুমেসা । আত্নবিশ্বাস আর কাজের প্রতি একাগ্রতাই তাকে সাহায্য করেছে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। টানা ৬ বছর আইবিএমএ কাজ করে অর্জন করেন দেশীয় বিপনন বাজারে তার নিজস্ব অবস’ান । ২০০২ সালে তিনি যোগ দেন বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তি পণ্য প্রতিষ্ঠান এইচপিতে। বাংলাদেশে এইচপি এর হয়ে দক্ষতার সঙ্গে এইচপি বাজার বৃদ্ধিসহ পণ্যে বাজার তৈরী করেন তিনি। তিনি প্রথম বাংলাদেশী নারী। যিনি যুক্ত হন এইচপির সংগে নতুন নতুন পণ্যের বাজারে তার অভিজ্ঞতার ঝুড়িটিও ভারী হতে থাকে, হার্ডওয়্যার পণ্যে বিপননের কাজটি এখন তার নকদর্পনে ২০০৭ পর্যন- এইচপিতে কাজ করে চ্যালেন পার্টনার ব্যবসা স’াপনায় যোগদেন ডেল-এ। হার্ডওয়্যার বাজার ব্যবস’াপনা বিপনন সফলতা তাকে দেয় এক নতুন পরিচয়। নতুন দ্বার উন্মোচন করে ২০১০ হার্ডওয়ার সফলতার অর্জন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এই সাহসী নারী যোগদেন সফটওয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ডিজি আইটিতে বর্তমানে কর্মরত আছে। তিনি মনে করেন লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে আর থাকে মনোবল সেই সংগে কর্মক্ষেত্রে সততা তাহলে যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব। নারীদের ঘরে বাইরে সর্বত্রই নিজের অবস’ানের জন্য নিজেদেরই তেরি করতে হবে। তবে পূর্ণ প্রস’তি ব্যতীত যুদ্ধে নামলে হোচট খাওয়া স্বাভাবিক এবং সেটাই একটা শিক্ষা আর নতুন করে পথচলার শুরু সেখান হতে। মেয়েদের জন্য মেয়েদের আরো এগিয়ে আসতে হবে, কাজ করতে হবে সবাইকে নিয়ে । এ মানসে কাজ করছেন বিডব্লিটআইটির সাথে।



@নারী এর আরও খবর

নারী কারুশিল্পী ও উৎপাদকদের ক্ষমতায়ন ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করা জরুরী নারী কারুশিল্পী ও উৎপাদকদের ক্ষমতায়ন ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করা জরুরী
বিকাশের ব্র্যান্ড এনডোর্সার হলেন বিদ্যা সিনহা মীম বিকাশের ব্র্যান্ড এনডোর্সার হলেন বিদ্যা সিনহা মীম
ইজেনারেশনে দৃষ্টিজয়ীর চাকুরি ইজেনারেশনে দৃষ্টিজয়ীর চাকুরি
বিপিও শিল্পে নারীর অবদান উদযাপন করলো বাক্কো বিপিও শিল্পে নারীর অবদান উদযাপন করলো বাক্কো
মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিসিসি ও ইউএনডিপির যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মশালা মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিসিসি ও ইউএনডিপির যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মশালা
‘হার পাওয়ার’ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত: প্রতিমন্ত্রী পলক ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত: প্রতিমন্ত্রী পলক
তারুণ্য ও প্রযুক্তির শক্তির সমন্বয়ে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ: জুনাইদ আহমেদ পলক তারুণ্য ও প্রযুক্তির শক্তির সমন্বয়ে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ: জুনাইদ আহমেদ পলক
স্মার্ট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা: জুনাইদ আহমেদ পলক স্মার্ট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা: জুনাইদ আহমেদ পলক
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড হলেন নাশিদ ফেরদৌস কামাল উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড হলেন নাশিদ ফেরদৌস কামাল
নারীর স্বাস্থ্যসেবায় সম্ভব হেলথ লিমিটেড ও সিরোনা নারীর স্বাস্থ্যসেবায় সম্ভব হেলথ লিমিটেড ও সিরোনা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
ভিপিএন এর নামে ক্ষতিকর অ্যাপের হুমকি বাড়ছে: ক্যাসপারস্কি
বাংলাদেশের বাজারে পিএনওয়াই ব্র্যান্ডের নতুন গ্রাফিক্স কার্ড
প্রযুক্তির সাহায্যে নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বেসিসের কার্যক্রম পরিচালনায় ১১ সদস্যের সহায়ক কমিটি গঠন
গ্রামীণফোন ও ইডটকো এর মধ্যে চুক্তি
গ্রামীণফোনের ‘প্রবাসী প্যাক’ চালু
১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অপো হ্যান্ডসেটে বিশেষ অফার
নতুন পানিরোধী স্মার্টফোন আনার গুঞ্জন রিয়েলমি’র
আইসিপিসি ঢাকা রিজিওনাল ২০২৪ এ চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়
দেশ সেরা ক্রিয়েটরদের অ্যাওয়ার্ডস দিল টিকটক