সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
বৃহস্পতিবার ● ৩০ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধে কার লাভ, কার ক্ষতি
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধে কার লাভ, কার ক্ষতি
৪৪৯০ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৩০ মে ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধে কার লাভ, কার ক্ষতি

---
তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ায় যুদ্ধের দামামা বেশ জোরেসোরেই বেজে উঠেছে। অনেক আগে থেকেই এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে, যার অংশ ছিল প্রায় গোটা দুনিয়া। কিন্তু চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষায়িত নিষেধাজ্ঞা জারি এবং একই সময়ে হুয়াওয়ের সঙ্গে গুগলের চুক্তি বাতিলের প্রেক্ষাপটে যুদ্ধটা এখন আর শুধু স্নায়ুর টানাপোড়েনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বিশ্ব বাণিজ্যের ময়দানে পূর্ণাঙ্গ অবয়বে প্রতিভাত হতে শুরু করেছে। কিন্তু এই যুদ্ধে কার লাভ, কার ক্ষতি? এই যুদ্ধের ভেতরে ভবিষ্যতের জন্য কোনো সম্ভাবনা কি আছে?

আধুনিক যুগের কম্পিউটার প্রযুক্তির জনক হিসেবে খ্যাত চার্লস ব্যাবেজের মেকানিক্যাল কম্পিউটার থেকে শুরু করে আজকের স্মার্ট কম্পিউটিং ডিভাইস পর্যন্ত বিশ্বে কম্পিউটিং সিস্টেমের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তথ্য ভাণ্ডারের বিবেচনায় আধুনিক কম্পিউটার থেকে সুপার কম্পিউটারই হোক, আর যোগাযোগের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক ইন্টারনেট ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক কিংবা ডিভাইসই হোক- সবকিছুতেই যুক্তরাষ্ট্র একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রেখেছে।
আপনি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কিনতে গেলে সাধারণত কোন কোন ব্র্যান্ডের কথা আগে ভাবেন? নিশ্চয়ই ডেল, এইচপি, আসুস কিংবা লেনোভোর কথা। এই চারটি প্রধান ব্র্যান্ডের মধ্যে ডেল, এইচপি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি। আর আসুস তাইওয়ানের কোম্পানি হলেও এর ওপর নিয়ন্ত্রণ চীনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরই বেশি। লেনোভো চীনের কোম্পানি, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথম বিশ্বে নাড়া দেয় ২০০৮ সালে, যখন এর মার্কেট শেয়ার শীর্ষ পাঁচটি ব্র্যান্ডের মধ্যে চলে আসে। আর একটি কোম্পানি কমপ্যাক বেশ ভালোভাবে বাজারে এসেছিল, কিন্তু এটা অধিগ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এইচপি।

স্ট্যাটিসটার তথ্য অনুযায়ী, ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের (ওএস) ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ৭৬ শতাংশ একক মার্কেট শেয়ার যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফটের। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপলে’র আইওএসে’র মার্কেট শেয়ার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর লিনাক্সের ১ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে স্মার্টফোনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ওএসের মার্কেট শেয়ার ৭৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং আইওএসে’র ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আবার ধরুন, এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি সিসকো এক নম্বরে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারন্টে বা ফাইবার অপটিক ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি সিয়েনা এক নম্বরে। আপনি ডিভাইস তৈরির জন্য চিপসেট, মাইক্রোচিপ যেটার কথাই বলুন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি কোয়ালকম, ইনটেল, ডেল সিংহভাগ বাজার দখল করে আছে। শুধুমাত্র টেলিযোগাযোগে রেডিও যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে চীনের হুয়াওয়ে ২০১৮ সালে ২৯ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বিশ্ব বাজারে এক নম্বরে ছিল, যা এ বছর ৩২ শতাংশে বিস্তৃতি হওয়ার আভাস রয়েছে।

স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ২৩ শতাংশ একক মার্কেট শেয়ার নিয়ে শীর্ষে আছে। তার ঠিক নিচে থাকা চীনের হুয়াওয়ের মার্কেট মেয়ার ১৯ শতাংশ। আর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপলের আইফোনের মার্কেট শেয়ার ১১ শতাংশ। এর বাইরে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় কোম্পানিগুলোর ক্ষুত্র ক্ষুদ্র মার্কেট শেয়ার রয়েছে। এসব ছাড়াও অনলাইনে বিশ্বে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেমন: ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইয়াহু, হোয়াটস অ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম- সবকিছুই যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন।

উপরের পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে কম্পিউটার, স্মার্টফোন, নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতির মূল উপাদান চিপসেট, মাইক্রোচিপ থেকে শুরু করে নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি এবং কম্পিউটিং সিস্টেমের সব কিছুর বাজার মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোরই নিয়ন্ত্রণে। এখানেই প্রশ্ন ওঠে- তাহলে এ তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধে চীনের সত্যিই কোনো অবস্থান আছে কি? খোলা চোখে দেখলে তথ্যপ্রযুক্তির বাজারে চীনের অবস্থানও এখনও খুবই দুর্বল কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মত নয়। কিন্তু খোলা চোখে এই যুদ্ধটাকে দেখলে ভুল হবে।

এখানে যুদ্ধের দু’টি দিক আছে। প্রথম দিকটি হচ্ছে, চীনের নিজস্ব বাজার। একশ’ কোটির বেশি মানুষের দেশ চীন নিঃসন্দেহে বিশ্বের বৃহত্তম বাজার। এই বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো ক্রমাগত বাজার হারিয়েছে। কারণ চীনা কোম্পানিগুলো যতটা না বিশ্ব বাজারের দিকে নজর দিয়েছে, তার চেয়ে বেশি নজর দিয়েছে নিজের বাজারের দিকে। কারণ চীনের বাজারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ মার্কেট শেয়ার পেলেই একটা কোম্পানি লাভের হিসেব করতে পারে চোখ বন্ধ করে। চীনে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক, গুগল, ইয়াহু, হোয়াটস অ্যাপ, ইউটিউব, জিমেইল সবকিছুই বন্ধ। এর পরিবর্তে চীনারা ব্যবহার করে উইচ্যাট আর ইউবো। এ দু’টি নেটওয়ার্কিং সাইটের কথা চীনের বাইরে অনেকেই জানেন না। কিন্তু চীনে এ দু’টি সাইটের মার্কেট শেয়ার ৯৫ শতাংশের বেশি। চীনের বাজারে আইফোনের মার্কেট শেয়ার ১০ শতাংশ, স্যাংমসাংয়ের ১ শতাংশের নিচে। যেখানে চীনের হুয়াওয়ের ৬০ শতাংশ, শাওমি, ভিভো, অপোর বাকি প্রায় ৩০ শতাংশ। চীনা কর্তৃপক্ষের যুক্তি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো সারা বিশ্বের মানুষের তথ্যের মালিক হয়ে যাচ্ছে, যে তথ্য তারা যে কোনো সময় অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে। যে কারণে চীনের মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করতে পারবে না। অথচ অদ্ভুত হচ্ছে, চীনা কোম্পানিগুলো নেটওয়ার্কিং ডিভাইস থেকে শুরু করে স্মার্টফোন- সবকিছুতেই মার্কিন কোম্পানির তৈরি মাইক্রোচিপ ও চিপসেট এবং মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করছে! হুয়াওয়ে, অপো, ভিভো, ওয়ান প্লাস- সবাই নিজেরা গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছে, অথচ চীনে গুগলের ব্যবহার নিষিদ্ধ!

উল্টোদিকে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে, জেডটিই’র নেটওয়ার্কিং যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তথ্য চুরি ও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলো বার বার কোম্পানি দু’টিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপলসহ বেশিরভাগ কোম্পানিরই সবচেয়ে বড় কারখানা চীনে অবস্থিত এবং ‘রেয়ার আর্থ’ (মাইক্রোচিপসহ ডিভাইস তৈরিতে ব্যবহৃত ধাতব মৌল খনিজ উপাদান ল্যান্থানাইড গ্রুপের ১৫টি এবং স্কায়ন্ডিয়াম ও ইট্রিয়াম) মৌল কিনছে চীনের কাছ থেকেই! প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে অপরিহার্য রেয়ার আর্থ মৌলের ব্যবসায় যেহেতু চীনের একক আধিপত্য, সে কারণে চীন এটাকেও পুঁজি করে যুক্তরাষ্ট্রকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। কিন্তু জাপানসহ বিভিন্ন দেশের ভূতত্ত্ববিদরা প্রমাণ করেছেন, নাম ‘রেয়ার আর্থ’ হলেও প্রকৃতপক্ষে এই খনিজ মৌল উপাদান বিশ্বে ‘রেয়ার’ নয়। বাজারের বাস্তবতায় এতদিন পর্যন্ত চীনের বাইরে অনেক দেশ বিপুল সম্ভার থাকা সত্ত্বেও রেয়ার আর্থের বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়নি, কিন্তু চীন এটাকে পুঁজি করলে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের অনেক দেশের ‘রেয়ার আর্থ’ মৌলের বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে বেশি সময় লাগবে না।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোতে প্রতিকূল পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের উত্থান তথ্যপ্রযুক্তির বাজারে সত্যিই একটি বিস্ময়। হুয়াওয়ে চীনের একমাত্র কোম্পানি যারা তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ববাজারে নিজেদের শীর্ষ পর্যায়ভুক্ত করেছে এবং এত কম সময়ে বিশ্বজুড়ে হুয়াওয়ে এত বেশি বিস্তৃত হয়েছে যেটা যুক্তরাষ্ট্রের সামনে বড় অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। চীনের বাজার তো নেইই, এখন বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছে হুয়াওয়ে।
হুয়াওয়ে বিশ্ববাজারে নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তির ব্যাপক বাজারজাতকরণ শুরু করে ২০০০ সাল থেকে। ২০১০ সালের মধ্যেই হুয়াওয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সিসকো, সিয়েনা, সিমেন্স, অ্যালকাটেল, ইউরোপের এরিকসন, নোকিয়ার বাজারে ধস নামিয়ে প্রবল আধিপত্য নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এশিয়া ও আফ্রিকায় হুয়াওয়ের মার্কেট শেয়ার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ২০১৫ সালের মধ্যে হুয়াওয়ে ইউরোপের বাজারের ২০ শতাংশের বেশি মার্কেট শেয়ার দখলে নেয়। আবার স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে হুয়াওয়ের ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের মধ্যেই বিশ্ববাজারে দ্বিতীয় স্থানে চলে আসাটাও বড় বিস্ময়ের। এমনকি হুয়াওয়ে চীনের একমাত্র কোম্পানি যারা সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতা নিয়ে নিজেদের অপবাদ ঘুচিয়ে ২০১৮ সালেই ‘নিরাপদ প্রযুক্তি’র জন্য আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে।

অতএব চীনের একটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের এতগুলো কোম্পানিকে এভাবে বিশ্ববাজারে পর্যুদস্ত করে ফেলছে যেটা নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষকে বেশ চিন্তিত করেছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু এবারে কট্টর রক্ষণশীল চিন্তার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তাকে হুয়াওয়ের অগ্রযাত্রায় বড় বাধা হিসেবে দেখছেন অনেক প্রযুক্তবিদ। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানিকে হুয়াওয়ের সঙ্গে বাণিজ্য করতে হলে বিশেষভাবে অনুমতি নিতে হবে। প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি কেয়ালকম ও ইনটেল মাইক্রোচিপ ও চিপসেট সরবরাহ না করলে হুয়াওয়েকে বিকল্প উৎপাদনের কথা ভাবতে হবে। এই বিকল্প পথে যাওয়ার সক্ষমতা হয়তো হুয়াওয়ের আছে, কিন্তু সে পথে যেতে যে সময়টা লাগবে তার প্রবল নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশ্ববাজারের মার্কেট শেয়ারে। আবার হুয়াওয়ের স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা সম্ভব না হলে এক্ষেত্রেও হুয়াওয়েকে নতুন করে ভাবতে হবে। ভাবতে হবে বিশ্বজুড়ে বিপুল জনপ্রিয় জিমেইল, গুগল ম্যাপ কিংবা ইউটিউবের বিকল্পও। এসব ক্ষেত্রে বিকল্প তৈরি হুয়াওয়ের মত বিশাল কোম্পানির জন্য অসম্ভব নয়। কিন্তু বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কিং সাইটের বাজার তৈরি করা সত্যিই কঠিন, যা সামনের দিনগুলোতে হুয়াওয়েকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।

এক্ষেত্রে আপাতত সংকট হলেও হুয়াওয়ের হাত ধরে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন মেরুকরণের একটা সম্ভাবনাও বিপুলভাবে তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগের উদারপন্থী প্রেসিডেন্টরা বিশ্ববাজারের যুক্তির আলোয় নানা বিচার-বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের কৌশল অবলম্বন করতেন। যে কারণে তারা চীনের বড় বড় কোম্পানিগুলোকে নানাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীল করে রাখার কৌশল নিয়েছিলেন। রক্ষণশীল নীতির হলেও চীনা কর্তৃপক্ষ সহজে এবং কম সময়ে বাজার দখলের ব্যাকুলতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এতদিন খুব বেশি বিচলিত বোধ করেনি। কিন্তু অতি রক্ষণশীল ট্রাম্প যুক্তিকে পেছনে ঠেলে রক্ষণশীল নীতির চোখ দিয়ে বিশ্ববাজারকে এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলেছেন। তিনি চারদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর একচ্ছত্র মার্কেট শেয়ারে অভিভূত হয়ে নিয়ন্ত্রণে কৌশলের খোলসটাকে দুর্বল করে দিয়েছেন একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করেই। আর এটাই তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনাকে প্রবল করে তুলেছে। কারণ ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী পরিস্থিতিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে প্রযুক্তিগতভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে। দুই-তিন বছর বিশ্ববাজারে হুয়াওয়েকে হয়ত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হবে, উজানে নৌকা ঠেলতে হবে। কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ এবং চীনের কোম্পানিগুলো এখন স্রোতের গতিমুখই বদলে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেবে। সেটায় তারা সফল হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই একক আধিপত্য ধরে রাখা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বিশ্ববাজারে অস্তিত্ব ধরে রাখতে কঠোর পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে। কারণ চীন শুধু তথ্যপ্রযুক্তিতে নয়, এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন অ্যামেরিকা ও ইউরোপের একটি অংশে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক আধিপত্যটাও স্পষ্ট করেছে। ফলে তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার আজকের যুদ্ধ অদূর ভবিষ্যতে বড় বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সবশেষ একটা আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য। তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় হুয়াওয়ের উত্থান সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি থেকে ডিভাইস- সবকিছুই সুলভ মূল্যে পাওয়া সহজ করে দিয়েছিল। কিন্তু আজকের ‘যুদ্ধাবস্থার’ কারণে প্রযুক্তি পণ্যের দাম বেড়ে গেলেও যেতে পারে।



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় ৩৯৩২.৯ কোটি টাকা
নতুন দামে টেকনো স্পার্ক২০সি
টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি-তে বিকাশ পেমেন্টে ২০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক
গ্রাহকদের নজর কেড়েছে ইনফিনিক্সের নতুন ল্যাপটপ ইনবুক ওয়াইটু প্লাস
রবি’র ২৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
বিসিএস এর উদ্যোগে মাদারবোর্ড সারানোর ৮ দিনব্যাপী দ্বিতীয় পর্বের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ খাতের উদ্যোগ হুমকির মুখে
জাপান আইটি উইকে বেসিস ও বাক্কো
থাইল্যান্ডে ইউএন এসকাপ-এর ৮০তম সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্বে প্রতিমন্ত্রী পলক
আইসিসি টুর্নামেন্টের ডিজিটাল সম্প্রচার স্বত্ব পেল টফি